দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 21

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 21

লাশ কবরে রাখার আগে বসা

হযরত উবাদা ইবনুস সামিত (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলে পাক (স) কোন লাশের সাথে গেলে তা কবরে না রাখা পর্যন্ত বসতেন না । একদা এক ইহুদী পণ্ডিত তাঁকে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমরাও এরূপ করি এরপর থেকে রাসুলে পাক (স) (লাশ কবরে রাখার) আগেই বসতে লাগলেন এবং বললেন : তোমরা তাদের উল্টো কর।

সওয়াবের আশায় বিপদে ধৈর্য ধারণ করার তাৎপর্য

হযরত আবু সিনান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার ছেলে সিনানকে দাফন করলাম। আবু তালহা আল-খাওলানী (র) কবরের পাশে বসা ছিলেন। আমি যখন কবর থেকে উঠে আসার ইচ্ছা করলাম তখন তিনি আমার হাত ধরে বললেন, হে আবু সিনান! আমি কি তোমাকে সুসংবাদ দিব না? আমি বললাম, অবশ্যই দিন। 

তিনি বললেন, দাহ্হাক ইবনে আবদুর রহমান ইবনে আরযাব (র) আমাকে হযরত আবু মূসা আল-আশআরী (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত রাসুলে পাক (স) ইরশাদ করেন : যখন কোন বান্দার সন্তান মারা যায় তখন আল্লাহ্ তাঁর ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি আমার বান্দার সন্তানকে কেড়ে নিয়ে এলে? তারা বলে, হাঁ। 

মহান আল্লাহ্ আবার জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি তার হৃদয়ের টুকরাকে কেড়ে নিয়ে এলে? তারা বলে, হাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করেন, আমরা বান্দা তখন কি বলেছে? তারা বলে, সে আপনার প্রশংসা করেছে এবং ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়েছে। আল্লাহ বলেন, আমার এই বান্দার জন্য বেহেশতের মধ্যে একটি গৃহ তৈরী কর এবং তার নাম রাখ “বাইতুল হাম্দ” বা প্রশংসালয়।

জানাযার নামাযের তাকবীর

হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চার তাকবীরে নাজজাশীর জন্য (গায়বী) জানাযার নামায পড়েন। হযরত আবদুর রহমান ইবনে আবু লায়লা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যায়েদ হযরত ইবনে আরকাম (রা) আমাদের জানাযাগুলোতে চার তাকবীর বলতেন। কিন্তু তিনি এক জানাযায় পাঁচবার তাকবীর দেন। এই ব্যাপারে আমরা তাকে জিজ্ঞোস করলে তিনি বলেন, রাসুলে পাক (স) পাঁচ তাকবীরও দিতেন ।

জানাযার নামাযের দোয়া

হযরত আবু ইবরাহীম আল-আশহালী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলে পাক (স) জানাযার নামাযে এই দোয়া পড়তেন ঃ
“হে আল্লাহ্! আমাদের মধ্যকার জীবিত, মৃত উপস্থিত, অনুপস্থিত, ছোট বড় এবং পুরুষ ও মহিলা সকলকে আপনি ক্ষমা করুন” । ইয়াহ্ইয়া বলেন, আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান আমাকে হযরত আবু হুরায়রা (রা)-র সূত্রে নবী পাক (স) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। 

তবে এই বর্ণনায় আরো আছে : “হে আল্লাহ্! আপনি আমাদের মধ্যে যাদের জীবিত রাখেন তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখুন এবং যাদেরকে মৃত্যু দেন তাদেরকে ঈমানের সাথে মুত্যু দেন তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করুন” ।
হযরত আওফ ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত। 

তিনি বলেন, আমি রাসুলে পাক (স)-কে এক মৃতের জানাযায় যে দোয়া পড়তে শুনেছি তার বাক্যগুলি আমি মনে রেখেছি :“হে আল্লাহ্! তাকে ক্ষমা করুন, তাকে অনুগ্রহ করুন এবং তাকে (আপনার দয়ার) শিশির বিন্দু দিয়ে এমনভাবে ধৌত করে দিন যেভাবে কাপড় ধৌত করা হয়” ।

জানাযার নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করা

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী পাক (স) জানাযার নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন, হযরত তালহা আবদুল্লাহ্ ইবনে আওফ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এক মৃতের জানাযা পড়ালেন এবং তাতে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করলেন। আমি তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটা সুন্নাত অথবা সুন্নতের পূর্ণতা দানকারী ।

জানাযার নামাযের ধরন ও মৃতের জন্য সুপারিশ হযরত মারসাদ ইবনে আবদুল্লাহ্ আল-ইয়াযানীর (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মালেক ইবনে হুবাইরা (রা) যখন জানাযার নামায পড়াতেন তখন লোকজনের বলতেন, রাসুলে পাক (স) ইরশাদ করেছেন : তিন কাতার লোক যার জানাযা পড়েছে তার জন্য (বেহেশত) অবধারিত হয়েছে।

হযরত আয়শা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন মুসলমান মারা যাওয়ার পর যদি এক শতের একদল মুসলমান তার জানাযা পড়ে এবং তারা তার জন্য সুপারিশ করে, তবে তাদের সুপারিশ তার জন্য কবুল করা হবে। আলী (ইবনে হুজরে) তার বর্ণিত হাদীসে (এক শতের স্থলে) এক শত বা ততোধিক' বাক্য বর্ণনা করেছেন।

সূর্যোদয় ও অস্তের সময় জানাযার নামায পড়া মাকরূহ

হযরত উকবা ইবনে আমের আল-জুহানী (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, এমন তিনটি সময় আছে যখন রাসুলে পাক (স) আমাদেরকে নামায পড়তে অথবা আমাদের মৃতেদের দাফন করতে বারণ করতেন : চমক করে সূর্য উঠার সময়-তা পূর্ণরূপে না উঠা পর্যন্ত; যখন দুপুরের সময় সূর্য ঠিক (মাথার উপর সোজা হয়ে যায়—যতক্ষণ পর্যন্ত তা ঢলে পড়ে এবং যখন সূর্য ডুবে যাওয়ার সময় হয়, তা সম্পূর্ণরূপে ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত ।

শিশুদের জন্য জানাযার নামায পড়া

হযরত মুগীরা ইবনে শোবা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী পাক (স) ইরশাদ করেছেন : আরোহী ব্যক্তি লাশের পিছে পিছে চলবে, পদব্ৰজে যাওয়া ব্যক্তি লাশের যেদিক দিয়ে ইচ্ছা চলবে এবং শিশুর (লাশের) জানাযা ও পড়তে হবে ।

ভূমিষ্ঠ হয়ে চিৎকার না করলে-সেই শিশুর জানাযা না পড়া

হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী পাক (স) ইরশাদ করেন : কোন শিশু ভূমিষ্ঠ হয়ে চিৎকার না করলে তার জানাযার নামায পড়তে হবে না, সে কারো উত্তরাধিকারী হবে না এবং তারও কেউ উত্তরাধিকারী হবে না ।

মসজিদে জানাযার নামায পড়া

হযরত আয়শা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলে পাক (স.) মসজিদে অভ্যন্তরভাগে হযরত সুহাইল ইবনুল বাইদা (রা)-র জানাযায় নামায পড়েছেন ।

পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জানাযার | নামাযে ইমাম কোথায় দাঁড়াবে

হযরত আবু গালিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস (রা)-র সাথে এক ব্যক্তির জানাযার নামায পড়লাম । তিনি লাশের মাথা বরাবর দাঁড়ালেন। অতঃপর লোকেরা কুরাইশ বংশের এক মহিলার লাশ নিয়ে এলো। তারা বলল, হে হামযার বাপ! এর জানাযার নামায পড়ন। 

তিনি তার খাটিয়ার মাঝ বরাবর দাঁড়ালেন। হযরত আলা ইবনে যিয়াদ (র) তাকে বললেন, আপনি যেভাবে স্ত্রীলোকটির খাটিয়ার মাঝ বরাবর এবং পুরুষ লোকটির মাথা বরাবর দাঁড়াবেন, রাসুলে পাককে (স) কি এভাবে দাঁড়াতে দেখেছেন? তিনি বললেন, হাঁ। 

নামায শেষে তিনি বললেন, একেই নিয়ম তোমরা ভালোভাবে স্মরণ রা ।
হযরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী পাক (স) এক মহিলার জানাযা পড়ান, তিনি তার কোমর বরাবর দাঁড়ান ।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন !