দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 22

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 22


শহীদ ব্যক্তির জানাযা না পড়া

হযরত আবুদর রহমান ইবনে কাব ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত। হযরত জাবির (রা) তাকে জানিয়েছেন যে, নবী পাক (স) উহুদের যুদ্ধের দুই দুইজন শহীদকে একই কাপড়ে একত্রে কাফন দিয়েছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করতেন : এদের উভয়ের মধ্যে কার কুরআন শরীফ বেশি মুখস্ত আছে? 


তাদের কোন একজনের প্রতি ইশারা করা হলে তিনি তাকে প্রথমে (কিবলার দিকে) কবরে রাখতেন। অতঃপর তিনি বলেন : আমি কিয়ামতের দিন এদের জন্য সাক্ষী হব। (রাবী বলেন) তিনি তাদেরকে রক্তমাখা দেহেই দাফন করার নির্দেশ দিলেন এবং তাদের জানাযা পড়েননি, এমনকি তাদের গোসলও দেয়া হয়নি।


কবরের উপর জানাযা পড়া

হযরত শাবী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে এমন ব্যক্তি বলেছেন যিনি নবী পাক (স)-কে দেখেছেন, তিনি একটি বিচ্ছিন্ন কবর দেখলেন। নবী পাক (স) তাঁর সাহাবীদেরকে কাতারবন্দী করে দাঁড় করালেন এবং কবর সামনে রেখে জানাযার নামায পড়লেন। রাবীকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনাকে কে বলেছেন? তিনি বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রা)।


হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত সাদ (রা)-এর মা ইন্তিকাল করলেন। এ সময় নবী পাক (স) উপস্থিত ছিলেন না। তিনি (সফর থেকে) ফিরে এসে তার জানাযার নামায পড়েন)। ইতিমধ্যে (মৃত্যুর পর) একমাস গত হয়েছিল। 


নাজজাশীর জন্য মহানবী (স)-এর জানাযার নামায হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসুলে পাক (স) আমাদের বললেন : তোমাদের ভাই নাজজাশী ইন্ডিকাল করেছেন। তোমরা দাঁড়িয়ে তার জন্য নামায পড়। রাবী বলেন, আমরা উঠে মৃতের জানাযার নামাযের অনুরূপ কাতার বাঁধলাম এবং তার জন্য জানাযার নামায পড়লাম ।


জানাযার নামাযের তাৎপর্য

হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসূলে পাক (স) ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি জানাযার নামায পড়ল তার জন্য এক 'কীরাত নেকী। আর যে ব্যক্তি জানযার সাথে সাথে যায় এবং দাফনের কাজ শেষ করা পর্যন্ত থাকে তার জন্য দুই কীরাত নেকী। 


এর একটি অথবা অপেক্ষাকৃত ছোটটি উহুদ পর্বতের সমান। (রাবী বলেন) আমি ইবৃনে উমারের কাছে একথা বললে তিনি আয়শা (রা)-র নিকট লোক পাঠিয়ে তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, হযরত আবু হুরায়রা সত্য কথা বলেছেন। হযরত উবৃনে উমার (রা) বলেন, তাহলে আমরা তো অনেক কীরাত থেকে মাহরুম হয়েছি।


লাশের সাথে সাথে যাওয়ার তাৎপর্য

হযরত আব্বাস ইবনে মানসুর (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি আবুল মুহাযযামকে বলতে শুনেছি : আমি দশ বছর যাবত হযরত আবু হুরায়ররা (রা)-র সাহচার্যে ছিলাম। আমি বলতে শুনেছি, আমি রাসুলে পাক (স)-কে বলতে শুনেছি : যে ব্যক্তি লাশের পিছে পিছে যায় এবং তিনবার বহন করে সে সাইয়্যিতের প্রতি তার কর্তব্য পূর্ণরূপে আদায়

করল।

লাশ নিয়ে যেতে দেখে দাঁড়ানো

হযরত আমের ইবনে রাবীআ (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, হযরত রাসুলে পাক (স) ইরশাদ করেন : তোমরা লাশ নিয়ে যেতে দেখলে দাঁড়িয়ে যাবে। তোমাদেরকে অতিক্রম না করা পর্যন্ত অথবা তা মাটিতে রাখা পর্যন্ত তোমারা দাঁড়িয়ে থাকবে।

হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসুলে পাক (স) ইরশাদ করেছেন ঃ তোমরা লাশ নিয়ে যেতে দেখলে দাঁড়িয়ে যাবে। যে ব্যক্তি লাশের পিছে পিছে যাবে সে যেন তা নীচে নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত না বসে।


লাশ দেখে না দাঁড়ানোর অনুমতি প্রসংগে

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “লাশ নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা” সম্পর্কে তার সামনে আলোচনা করা হলে তিনি বলেন, হযরত রাসূলে পাক (স) পূর্বে দাঁড়াতেন কিন্তু পরবর্তীতে বসে থেকেছেন।


নবী (স)-এর বাণী : 

লাহ্দ কবর আমাদের জন্য এবং শাক কবর অন্যদের জন্য

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী পাক (স) ইরশাদ করেছেন : লাহ্দ আমাদের জন্য এবং শাক অন্যদের জন্য ।


লাশ কবরে রাখার সময় যে দোয়া পড়তে হয়

হযরত ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন মৃতকে কবরে রাখা হত; আবু খালিদের বর্ণনায় আছে, যখন মৃতকে তার কবরে রাখা হত তখন নবী পাক (স) বলতেন : “বিসমিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ্”, অপর বর্ণনায় আছে “বিসমিল্লাহি ওয়া বিল্লাহি ওয়া সুন্নাতি রাসূলুল্লাহ (স)।


কবরে লাশের নিচে একটি কাপড় বিছানো

হযরত জাফর ইবনে মুহাম্মদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যিনি রাসুলে পাক (স) এর জন্য লাহুদ (সিন্দুকী) কবর খুঁড়েছিলেন তিনি হলেন আবু তালহা (রা)। আর যিনি তাঁর (কবরে লাশের) নীচে পশমী চাদর বিচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি হলেন রাসুলে পাক (স)-এর মুক্তদাস শুকরান (রা)। জাফর (র) বলেন, আবু রাফের ছেলে আমাকে জানিযেছেন, তিনি বলেছেন, আমি শুকরানকে বলতে শুনেছি : আল্লাহর শপথ! 


আমিই কবরে রাসুলে পাকের (স) নিচে পশমী চাদর পেতে দিয়েছি। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলে পাক (স) কবরে একটি লাল পশমী চাদর বিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।


কবর সমান করা

হযরত আবু ওয়াইল (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আলী (রা) আবুল হাইয়ায আলা- আসাদীকে বললেন, আমি তোমাকে এমন কাজের দায়িত্ব দিয়ে পাঠাব যে কাজ করতে নবী পাক (স) আমাকে প্রেরণ করেছিলেন। কোন উচ্চ কবর সমান না করে ছাড়বে না এবং কোন মূর্তি না ভেংগে রাখবে না ।


কবরের উপর দিয়ে যাতায়াত করা এবং এর উপর বসা মাকরূহ

হযরত আবু মারসাদ আল-গনাবী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী পাক (স) ইরশাদ করেছেন : তোমরা কবরের উপর বসবে না এবং করব সামনে রেখে নামায পড়বে না ।


কবর পাকা করা এবং তাতে ফলক লাগানো নিষেধ

হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসুলে পাক (স) কবর পাকা করতে, তার উপর কিছু লিখে রাখতে, তার উপর কিছু তৈরী করতে এবং তা পদদলিত করতে বারণ করেছেন।


কবরস্তানে প্রবেশ করে যা বলতে হবে

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলে পাক (স) মানব কবরস্তানের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি কবরবাসীদের দিকে মুখ কর বললেন : “আসসালামু আলাইকুম ইয়া আলাল কূকূর, ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহ্ বিল আসর।”


Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন !