দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 15

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 15

কবর যিয়ারত

কোন কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলে এ দোয়া পাঠ করতে হয়।
উচ্চারণ ঃ আস্সালামু আলাইকুম ইয়া আহলালকুবৃর ।
অর্থ : হে কবর বাসীগণ! তোমাদের উপর শান্তিবর্ষিত হোক । এরপর কবর যিয়ারতের নিয়ত থাকরে দাঁড়িয়ে সর্ব প্রথম এ দোয়া পড়বে-

উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম ইয়া আতালদিয়ারি মু'মিনীনা ওয়াল মু'মিনাতি ওয়াল মুসলিমীনা ওয়ার মুসলিমাত ওয়া ইন্না ইনশা আল্লাহু বিকুম লাহিকুনা নাসআলুল্লাহা লানা ওয়া লাকুমুল আফিয়াহ ।
এরপর দরূদ শরীফ, সূরায়ে ফাতেহা, ইখলাছ, নাছ, ফালাক, কাফিরুন ইয়াসিন, ও সূরায়ে মূলক ইত্যাদি সূরা এবং কোরআনের অন্যান্য আয়াত যতটুকু সম্ভব হয় তিলাওয়াত করে তার ছওয়াব তাদের রুহের মাগফিরাতের জন্য দান করে দিবে। 

যদি কেউ ইচ্ছে করে তবে হাত উঠিয়ে স্বীয় মনোবাঞ্ছা আল্লাহর কাছে বলতে পারে, তবে কবরস্থানে হাত না উঠিয়ে দোয়া করাই ভাল । এছাড়াও নফল নামায, রোযা ক্ষুধার্তকে অন্ন দান মসজিদ ও মাদ্রাসায় দান করার মাধ্যমেও মৃতের জন্য ছওয়াব রেসানী করা যায়। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে তার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।

যে সব শিশুর জানায়া দিতে হবে না

যদি কোন মৃত সন্তান প্রসব হয়ে থাকে, তবে সে শিশুর নাম রেখে মুর্দার নিয়মে গোসল দেবে এবং একখানা কাপড় জড়ায়ে কবর দেবে। এ শিশুর কোনরূপ জানাযা পড়া লাগবে না। (শঃ বেকায়া)
অকালে গর্ভপাতের কারণে যদি সন্তানের হাত, পা, কান, মুখ ইত্যাদি কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রকাশ না পায়, তবে তার নাম না রেখে একখানা কাপড় জড়ায়ে গর্ত করে তাতে রেখে দেবে। 

এরূপ সন্তানকে গোসল দেয়া লাগবে না ।(উমঃ ক্বারী)
আর হাত-পা ইত্যাদি প্রকাশ পেয়ে থাকলে গোসল দেবে এবং নাম রাখবে কিন্তু জানাযা পড়া লাগবে না। (উমঃ ক্কারী)
সন্তান প্রসবের সময় শুধুমাত্র মাথা বের হয়ে অল্প কিছুক্ষণ জীবিত থাকার পর মারা গেলেও সে সন্তান মৃত প্রসব হয়েছে বলে গণ্য হবে। 

সুতরাং এ সন্তানের নাম রাখতে হবে এবং গোসল দিতে হবে। 
আর যদি বুক পর্যন্ত বের হয়, তাহলে সে সন্তানও জীবিত বলে গণ্য হবে এবং তার নাম রাখা, গোসল দেয়া, কাফন পরান এবং জানাযা সবই দিতে হবে।

জানাযা সম্পৰ্কীয় কতিপয় জ্ঞাতব্য বিষয়

ও মৃত ব্যক্তির জানাযা না পড়ে যদি কবর দেয়া হয়, তাহলে তিনদিন পর্যন্ত তার কবরে জানাযা পড়া যাবে। (শরঃ বেকায়া) জীবিত অবস্থায় কোন লোক নিজের জন্য কবর তৈরি করে রাখা মাকরুহ, কিন্তু কাফনের কাপড় প্রস্তুত রাখতে পারবে।
ও মৃত ব্যক্তির ওলীর বিনা অনুমতিতে কোন লোক জানাযা পড়ায়ে থাকলে মৃত ব্যক্তির ওলী পুনরায় নামায পড়াতে পারবে।
ও মৃত ব্যক্তির বাপ জীবিত থাকলে সে ওলী হবে। তা না হলে বড় ভাই, তা না হলে ছেলে ওলী হবে।

• ওলীগণের মধ্যে যিনি ‘আলেম হবেন তিনি নামায পড়াবেন, আর যদি সকলেই ‘আলেম হয়, তাহলে যিনি বয়সে বড় তিনিই নামায পড়াবেন। আর যদি নিজেদের মধ্যে কোন ‘আলেম না থাকে, তাহলে অন্য কোন ‘আলেমকে দিয়ে নামায পড়াবে ।

ও প্রত্যেক জুমার দিন পুরুষদের জন্য একবার কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব ।
• গর্ভবতী মহিলার মৃত্যুর পর যদি পেটে সন্তান নড়াচড়া করে, তাহলে তার পেট কেটে বাচ্চা বের করে নিতে হবে ।
কবরের উপর বা পার্শ্বের জীবন্ত গাছপালা কেটে নষ্ট করা মাকরুহ। কারণ এসব জীবন্ত গাছসমূহ আল্লাহ্র যিকির করে ।

মুর্দার খাট বহনের নিয়ম

পবিত্র হাদীস শরীফের বর্ণনায় জানা যায়, মুর্দাকে খাটে রাখার পর আকাশ হতে গায়েবী আওয়াজ হবে—“হে আল্লাহ্র বান্দাহ্! জীবিত অবস্থায় যেসব কাজকর্ম করেছিলে এখন সেগুলো তোমার নিকট পরিষ্কার।”
পবিত্র হাদীস শরীফের বর্ণনায় জানা যায়, মুর্দার খাট কবরের পাশে রাখার পর আকাশ হতে গায়েবী আওয়াজ হবে—“হে আল্লাহর বান্দাহ্! 

এতদিন তুমি পৃথিবীতে খুবই আনন্দের সাথে ও হাসি-খুশিতে ছিলে । আজ ক্রন্দনরত এবং চিন্তিত অবস্থায় আমার মধ্যে আশ্রয় নিবে। কতইনা আশ্রয় নিচ্ছ । বাকপটু ছিলে তুমি দুনিয়ার জমিনে, আর আজ বোবা হয়ে আমার মধ্যে আশ্রয় নিচ্ছে ।

জানাযার নামায শেষ হবার সাথে সাথে উচ্চৈঃস্বরে কালিমায়ে শাহাদাত, দোয়া-দরূদ ইত্যাদি পড়তে পড়তে চারজন নামাযী লোক খাটের চারকোণে ধরে উঠিয়ে নিজ কাঁধে নেবে এবং মাইয়্যেতের মাথার দিক সোজা করে কবরের দিকে নিয়ে যাবে এবং ৪০ কদম পর্যন্ত বদলিয়ে বদলিয়ে নেবে। 

বদলানোর নিয়ম হল, প্রথম দশ কদম হাঁটার পর মাইয়্যেতের সামনের দিকের ডান কাঁধের পায়ার লোক পেছনের ডানপায়ের নিকট যাবে এবং ডান পায়ের লোক বাম পায়ে, বাম পায়ের লোক সামনের বাম কাঁধের পায়ায়, বাম কাঁধের লোক ডান কাঁধের পায়ায় ধরবে এবং দশ কদম হাঁটার পর আবার উল্লিখিত নিয়মে ঘুরে এসে পুনরায় দশ কদম হাঁটবে এরপর আবার উল্লিখিত নিয়মে দশ কদম হেঁটে এসে কাঁধ পরিবর্তন করে মোট ৪০ কদম পুরা হলে উচ্চস্বরে দোয়া-দরূদ পাঠ করতে করতে কবরের দিকে নিয়ে যাবে। 

উল্লেখ্য, মাইয়্যেত যদি স্ত্রীলোক হয়, তাহলে অবশ্যই খাটের উপর পর্দার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং মুহরেম ব্যক্তিগণ (যাদের সাথে বিবাহ হারাম ছিল) তারা খাট বহন করবে।
আর মুর্দা যদি ছোট শিশু বাচ্চা হয় যে, তাকে কোলে তুলে নেয়া যাবে, তাহলে একজন নামাযী লোক দু'হাতের উপর উঠিয়ে নিয়ে কতদূর হেঁটে আরেক জনের নিকট দেবে এবং এভাবে হাত বদলিয়ে বদলিয়ে কবরের দিকে নিয়ে যাবে।

আর জুনুবী (যাদের উপর গোসল ফরয) সে সকল লোক নাপাকী অবস্থায় কোনক্রমেই এসব উল্লিখিত কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, সে লোক অতি তাড়াতাড়ি অযূ-গোসল করে পবিত্র হয়ে এসব (শরঃ বেকায়া)
কাজ করতে পারবে।
Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন