দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 30

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 30

মদীনা শরীফের যিয়ারত

পবিত্র হজ্জের কাজ সমাপ্ত করার আগে বা পরে প্রত্যেক হাজী সাহেবগণের একান্ত আবশ্যকীয় কাজ হল সাইয়্যেদুল মুরসালীন হযরত নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পবিত্র রওযা মুবারক যিয়ারত করা। এ কাজটি যদিও হজ্জের কোনরূপ অংশবিশেষ নয়, তবুও এ কাজকে উম্মতে মুহাম্মদীগণ অবশ্য করণীয় কাজ বলে মনে করে। এছাড়া পবিত্র হাদীস গ্রন্থে রওযা মুবারক যিয়ারতের ফযীলত সম্পর্কে অসংখ্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। যেমন—এক হাদীসে নবী (সাঃ) ইরশাদ করেন- “ আমার উম্মতের মধ্যে যে কোন লোক আমার ইন্তেকালের পর আমার রওয়া যিয়ারত করবে, সে যেন আমাকে জীবিত অবস্থায় দেখল।”

ও অন্য এক হাদীসে মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেন- “যে কোন লোক একমাত্র আমার যিয়ারতের উদ্দেশ্যেই মদীনা শরীফে আগমন করে এছাড়া - কোন দুনিয়াবী উদ্দেশ্য তার নেই, তাহলে আল্লাহর দরবারে তার এ অধিকার জন্মায় যে, তিনি আমাকে তার সুপারিশকারী বানাবেন।” অর্থাৎ‍ আমি তার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে অবশ্যই সুপারিশ করতে বাধ্য হব।

মদীনা যাওয়ার পথে যত বেশী সম্ভব নবী (সাঃ)-এর গুণ-গান সম্বলিত দরূদসমূহ এবং সালাম পাঠ করা কর্তব্য। এছাড়া যখন মদীনাৱ দেখা যাবে তখন অবশ্যই দরূদ এবং সালাম পাঠ করবে। এরপর শহরে প্রবেশ করার আগে উত্তমরূপে গোসল করবে ও খুশবু ব্যবহার করবে আর সাদা কাপড় পরিধান করে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে নিম্নের দোয়াটি পাঠ
করতে থাকবে -

উচ্চারণ : রাব্বি আদখিলনী মুদখানা ছিদকিওঁ ওয়া আখরিজনী মুখরাজা ছিদক্কিওঁ ওয়াহ্ আলী মিল্লা দুনকা সুলতানান্ নাছীরা ৷
অর্থ : হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে সততা অর্জনের স্থানে প্রবেশ করাও এবং সততার সাথে বাইরে আসতে সাহায্য কর এবং তোমার করুণা দ্বারা তুমি আমাদের জন্য সাহায্য দানকারী প্রেরণ কর।

এরপর মসজিদে নবুবীতে প্রবেশ করে মিম্বরের নিচে দাঁড়িয়ে এভাবে দুরাক'আত নফল নামায আদায় করবে যেন মিম্বরের খাম বা খুঁটি নিজের ডান কাঁধ বরাবর থাকে। কেননা ঐ স্থানে দাঁড়িয়ে নবী কারীম (সাঃ) সর্বদা নামায আদায় করতেন। এরপর রওযা মুবারক যিয়ারতের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রওযা মুবারকের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত আদবের সাথে দরদ শরীফ ও সালাম পাঠ করে প্রাণভরে দোয়া করবে। 

পবিত্র রওযা মুবারক যিয়ারত শেষ করে কিছুদূর সামনে এগিয়ে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ও হযরত ওমর (রাঃ)-এর রওযা মুবারক যিয়ারত করবে এবং প্রাণ ভরে দোয়া-মুনাজাত করে সেখান হতে জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে সেখানে শায়িত সাহাবীগণের কবর যিয়ারত শেষে আবার রওযা মুবারকে এসে প্রাণভরে দরূদ ও সালাম পাঠ করে সেখান হতে বিদায় নেবে।
মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামীন আমাদেরকে পবিত্র কা'বা ঘরের তাওয়াফ এবং মদীনা শরীফের রওযা মুবারক যিয়ারত করার তৌফিক দান করুন।

কুরবানীর বিবরণ

যেসব মুসলমান মালেকে নিসাব তথা যাদের ওপর যাকাত ফরয এবং ফিত্রা দেয়া ওয়াজিব, তাদের ওপর কুরবানী দান করাও ওয়াজিব। জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আযহা নামাযের পর হতে ১২ জিলহজ্জ তারিখের সূর্যাস্ত পর্যন্ত যে কোন সময়ে কুরবানী করা ওয়াজিব ।
o পবিত্র হাদীস শরীফে নবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন—“যে ব্যক্তি কুরবানী দেবে সে ব্যক্তি এত বেশি নেকী লাভ করবে যে, ঐ পশুর গায়ে যতগুলো পশম আছে ঐ পরিমাণ নেকী সে লাভ করবে।”

o অন্য এক হাদীসে নবী (সাঃ) বর্ণনা করেছেন—“কুরবানীকৃত পশুর রক্তের প্রথম ফোঁটা মাটিতে পড়ার আগেই কুরবানীদাতার কুরবানী মহান আল্লাহ্র নিকট কবুল হয়ে যায় এবং এজন্য শর্ত হল, কুরবানী একমাত্র মহান আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যেই হতে হবে। দুনিয়ার কোন উদ্দেশ্যে হয়ে থাকলে হবে না।”ইসলামিক কাহিনী,

• অন্য এক হাদীসে নবী (সাঃ) বর্ণনা করেছেন—“কুরবানীর দিন যেসব পশু কুরবানী দেয়া হয় কিয়ামতের দিন ঐ সকল পশুরা কুরবানীদাতাকে নিজের পিঠের ওপর বহন করে পুলছিরাত পার করে বেহেশতে নিয়ে যাবে।”
০ অন্য এক হাদীসে নবী (সাঃ) বর্ণনা করেছেন—“যে ব্যক্তি নিজেকে ঈদুল আযহার নামাযের আগে খানা-পিনা ও স্ত্রী সহবাস হতে বিরত রাখতে সক্ষম হবে, সে ব্যক্তি যেন ষাট হাজার বছর আল্লাহ্র ‘ইবাদাত করল।”

কুরবানীর পশুর বিবরণ ও অংশীদার

গরু, মহিষ, উট, দুম্বা, ভেড়া, বকরী, খাসী ইত্যাদি হালাল বস্তুর দ্বারা কুরবানী করা দুরস্ত। অন্য কোন জন্তু দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে না ।
উট, গরু, মহিষ এসব বড় জাতের কোন একটি জন্তু দ্বারা সাত জনের (সাত নাম) পর্যন্ত কুরবানী করা জায়েয আছে। তবে দুম্বা, ভেড়া, বকরীর ক্ষেত্রে একজনের নামে একটি কুরবানী দিতে হবে। এগুলোতে কোন অংশীদার করা যাবে না। যদি বড় জাতের জন্তুসমূহে সাত জনের কম পাঁচ, ছয়'জন শরীক হয় এবং কারও অংশ এক সপ্তমাংশ হতে কম না হয় তাহলে সকলের কুরবানীই জায়েয হবে। 

আর শরীক আটজন হলে কারও কুরবানী হবে না। কুরবানীর গরু খরিদ করার পূর্বেই যদি সাতজন অংশীদার হয়ে সকলে মিলে খরিদ করে তাহলে খুব উত্তম। আর যদি কোন লোক একা একটি গরু কুরবানীর নিয়্যতে খরিদ করে এবং মনে মনে এ ধারণা করে থাকে যে, পরে আরও লোক শরীক করিয়ে তাদের সাথে একসঙ্গে কুরবানী করব, তবে তাও জায়েয হবে। 

কিন্তু গরু খরিদ করার সময় যদি অন্যলোক শরীক করার নিয়্যত না করে একাকীভাবে কুরবানী করার খেয়াল থাকে এবং পরে অন্যকে শরীক করার ইচ্ছা করে, এমতাবস্থায় যদি ক্রেতা গরীব হয় এবং তার ওপর কুরবানী করা ওয়াজিব না হয়ে থাকে, তবে পরে সে অন্য কাউকে শরীক করতে পারবে না, বরং একাকীই কুরবানী করতে হবে। 

আর যদি ক্রেতা মালদার এবং তার ওপর কুরবানী করা ওয়াজিব হয়, তবে সে ইচ্ছা করলে পরে অন্য শরীকও নিতে পারবে। সাতজনে শরীক হয়ে যদি একটি গরু কুরবানী করে তবে সে গরুর গোশত আন্দাজের উপর ভাগ না করে বরং পাল্লায় ওজন করে সমান সমানভাবে ভাগ করবে; নতুবা ভাগের মধ্যে কিছু কমবেশী হলে গুনাহগার হতে হবে। 

অবশ্য গোশতের সাথে যদি মাথা, পায়া এবং চামড়া ভাগ করে দেয়া হয় তবে একভাগে মাথা, পায়া চামড়া থাকলে সে ভাগে গোশত কম হলেও জায়েয হবে। কিন্তু একভাগে গোত বেশি দিয়ে অন্য ভাগে মাথা, পায়া বা চামড়া দিলে গুনাহগার হবে। বকরী পূর্ণ এক বছরের কম হলে কুরবানী দুরস্ত হবে না। এক বছর পূর্ণ হলে জায়েয হবে। গরু, মহিষ দুবছরের কম হলে কুরবানী দুরস্ত হবে না, দুবছর পূর্ণ হলে জায়েয হবে। উট পাঁচ বছরের কম হলে দুরস্ত হবে না। 

দুম্বা ও ভেঁড়ার বয়স বকরীর অনুরূপ। কিন্তু ছ'মাসের বেশি বয়সের দুম্বার বাচ্চা যদি এরূপ হৃষ্টপুষ্ট ও বলিষ্ঠ হয়ে থাকে যে, এক বছরের দুম্বার মধ্যে ছেড়ে দিলে তা চিনে বের করা যায় না, তবে সেরূপ দুম্বার বাচ্চা দিয়ে কুরবানী করা জায়েয আছে। কিন্তু বকরীর বাচ্চা এরূপ মোটা-তাজা হলেও এক বছর পূর্ণ না হলে কুরবানী করা জায়েয হবে না।

কুরবানী করার নিয়ম ও দোয়া

কুরবানীর জন্তুর মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে বাম কাতে কিবলামুখী করে শোয়ায়ে প্রথমে এ দোয়াটি পড়বে—
উচ্চারণ : ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাচ্ছামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানীফাওঁ ওয়ামা আনা মিনাল মুকিীনা। ইন্না ছালাতী ওয়ানুসুকী ওয়া মাহ্ইয়াইয়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রাব্বিল আলামীনা । লা শারীকালাহু ওয়াবি যালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমীনা । আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন ফুলান ইবনি ফুলানিন বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ।

অর্থ : নিশ্চয়ই আমি আমার মুখমণ্ডলকে ঐ স্বত্ত্বার দিকে ফিরালাম যিনি সুবিশাল আকাশ ও জমিনের মালিক এবং নিশ্চয়ই আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই। নিশ্চয়ই আমার নামায এবং সকল ‘ইবাদাত এবং আমার জীবন, আমার মৃত্যু একমাত্র মহাবিশ্বের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে। আল্লাহর কোন অংশীদার নেই এবং এ কুরবানী তাঁরই নির্দেশে আমার উপর কর্তব্য, যেহেতু আমি মুসলমানদের দলভুক্ত। হে আল্লাহ্! অমুকের পুত্র অমুকের পক্ষ হতে তুমি এ কুরবানী কবুল কর, আমি তোমারই নামে কুরবানী করলাম ।

উল্লিখিত দোয়াটি পড়ার পর (বিস্ মিল্লাহি আল্লাহু আকবার) বলে পশু জবেহ করবে । জবেহ করা শেষ হলেই নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করবে—
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বালহু মিন্নী কামা তাক্বাব্বালতা মিন হাবীবিকা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া খালীলিকা ইব্রাহীমু ‘আলাইহিমুচ্ছালাতু
ওয়াচ্ছালামু।
অর্থ : হে আল্লাহ্! তুমি এ কুরবানী কবুল কর, যেমনিভাবে তোমার হাবীব মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তোমার দোস্ত ইব্রাহীম (আঃ) এর পক্ষ হতে (কুরবানী) কবুল করেছিলে।

উল্লেখ্য, কুরবানীদাতা যদি নিজেই কুরবানীর পশু জবেহ করেন তবে ৮. (মিনি) শব্দ বলবে, আর যদি অন্যের পক্ষ হতে করে তবে ত “মিন ফুলান”-এর স্থলে কুরবানী দাতার নাম ও তাদের পিতার নাম উল্লেখ করবে। আর যদি জবেহকারীর সাথে অন্য শরীক থাকে, তাহলে
“মিন্নি” শব্দের পর“মিন” শব্দ বলে অন্য শরীকদের নাম এবং তাদের
পিতার নাম উল্লেখ করবে।

কুরবানীর কতিপয় মাসয়ালা

o যে জন্তুর দুটি চোখ বা একটি চোখ পূর্ণ অন্ধ বা একটি চোখের তিন ভাগের এক ভাগ কিংবা তারও বেশি নষ্ট হয়ে গেছে, সে জন্তু দ্বারা কুরবানী জায়েয নেই। এমনিভাবে যে জন্তুর একটি কানের বা লেজের এক-তৃতীয়াংশ বা তার চেয়েও বেশি কাটা হয়, সে জন্তু দ্বারাও কুরবানী
জায়েয হবে না ।

ও যদি কোন জন্তু এমন কৃশ ও শুকনা হয় যে, তার হাঁড়ের মধ্যকার মগজও শুকিয়ে গেছে. তবে সে জন্তু দ্বারা কুরবানী জায়েয নয়। আর যদি হাড়ের ভেতরের মগজ না শুকিয়ে থাকে তাহলে জায়েয হবে।
o কুরবানীর গোশ্ত নিজে এবং নিজের পরিবারবর্গ সকলেই খাবে এবং আত্মীয়-স্বজনদেরকে হাদীয়া দেবে, গরিব-মিসকিনদেরকে এক- তৃতীয়াংশ দান করবে, অবশ্য এর চেয়ে কম দান করলেও গুনাহ্ হবে না।

• কুরবানীর চামড়া দান-খয়রাত করে দেবে, কিন্তু চামড়া বিক্রি করলে সে বিক্রিত মূল্যই গরিব-মিসকীনদেরকে দান করতে হবে।
০ কুরবানীর চামড়া বা তার মূল্য মসজিদ, মাদ্রাসা মেরামতের কাজে খরচ করা জায়েয নয়, তবে মাদ্রাসার ইয়াতীমখানা, গোরাবা ফান্ডে দান করা যাবে কিংবা গরিবদেরকে দান করে দেবে।

ও যদি চামড়া নিজের কাজে ব্যবহার করে। যেমন—তা দ্বারা চালনি, মশক, ডোল বা জায়নামায ইত্যাদি তৈরি করে থাকে, তবে তা জায়েয
আছে।
• কুরবানীর জন্তু জবেহকারী এবং গোশ্ত প্রস্তুতকারীদের পারিশ্রমিক পৃথকভাবে দিয়ে দেবে, কুরবানীর গোশত কিংবা চামড়ার বিনিময়ে দিলে জারে হবে না ।

ও যদি কোন লোক নিজ ইচ্ছায় মৃত ব্যক্তির রুহে ছাওয়াব পৌঁছাবার উদ্দেশ্যে কুরবানী করে, তবে সে ব্যক্তি উহার গোশ্ত নিজে খাওয়া বা অন্য লোককে দান করা জায়েয আছে। কিন্তু যদি কোন মৃত ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্বে কুরবানী করার জন্য অছিয়ত করে যায়, তবে সে গোশ্ত সবগুলোই গরিবদের মধ্যে খয়রাত করে দেয়া ওয়াজিব হবে।

০ গর্ভবতী জন্তু কুরবানী করা জায়েয নেই। তবে অজানা অবস্থায় যদি কুরবানী করার পর পেটে বাচ্চা পাওয়া যায়, তাহলে সে বাচ্চা জবেহ করে তার কিছু অংশ কুরবানীর গোতের সাথে মিলিয়ে নিতে হবে, নতুবা কুরবানী শুদ্ধ হবে না ।

জবেহের বিবরণ

ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী কোন ধারাল অস্ত্র দিয়ে হালাল প্রাণীর গলা কেটে রক্ত প্রবাহিত করাকে জবেহ্ বলে ।
জবেহ করার নিয়ম-জানোয়ারের মাথা দক্ষিণ দিকে এবং মুখ কিবলার দিকে ফিরিয়ে শোয়াবে। এরপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে “বিসৃমিল্লাহি আল্লাহু আকাবার” বলে জবেহ করবে। জবেহ হওয়ার শর্ত : জবেহ করার জন্য শর্ত হল, জানোয়ারের গলায় অবস্থিত চারটি রগের চারটি রগই কাটতে হবে। 

ঐ চারটি রগ যথাক্রমে শ্বাস-প্রশ্বাসের রগ, একটি পানাহারের রগ এবং বাকী দুটি দুপাশের মোটা রগ।
যদি চারটির স্থলে দুটি কাটে তাহলে হালাল হবে না। আর যদি তিনটি কাটে তাহলে জবেহকৃত জানোয়ারের গোশত খাওয়া হালাল হবে । জবেহ সাধারণত দুপ্রকার। যথা—ইখতিয়ারী ও ইযতিবারী। নিম্নে
এগুলোর আলোচনা করা হল ।

১। ইখতিয়ারী বা ইচ্ছাকৃত জবেহ : কোন পশুকে ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলামী বিধান অনুযায়ী দক্ষিণ শিয়রে শোয়ায়ে কিবলামুখী করে জবেহ্ করাকে ইখতিয়ারী জবেহ বলে ।
২। ইতিরারী বা অনিচ্ছাকৃত জবেহ : কোন প্রাণী নিজ আয়ত্বে এনে জবেহ করতে অক্ষম হওয়ার কারণে তীর, বর্ষা, বল্লম বা এ ধরনের অন্য কোন ধারাল অস্ত্র নিক্ষেপ করে জবেহ করাকে “ইযতিবারী” জবেহ বলে। অতএব এ ধরনের কোন অস্ত্র “বিমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলে ছোঁয়ার দ্বারা কোন হালাল প্রাণী মারা গেলে সেটি খাওয়া জায়েয হবে, আর যদি জীবিত অবস্থায় পেয়ে থাকে তবে জবেহ করতে হবে।

জবেহ করার সময়ে নিম্নের কাজগুলো করা ওয়াজিব

(ক) জবেহ্ করার সময় “বিস্ মিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলা। (খ) গলার যে চারটি রগ আছে সে চারটি রগই কেটে দেয়া বা অন্তত তিনটি কেটে দেয়া। (গ) কেবলমাত্র আল্লাহ্ উদ্দেশ্যে জবের নিয়্যত থাকা। (ঘ) রক্ত প্রবাহিত করে দেয়া। (ঙ) দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে কিবলামুখী করে জবেহ্ করা ।

জবেহ করার সময় নিম্নলিখিত কাজগুলো মাকরুহ

(ক) কম ধারাল বা ভোঁতা অস্ত্র দ্বারা জবেহ্ করা। (খ) বিসমিল্লাহ না বলা। (ভুলে যাওয়া)। (গ) জবেহ্ করার সময় সমস্ত গলা কেটে মাথা পৃথক করে ফেলা। (ঘ) সম্পূর্ণরূপে রুহ বের হওয়ার পূর্বে পায়ের রগ কাটা বা চামড়া ছাড়ান। (ঙ) মাথা ডানদিকে রেখে জবেহ করা।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন !