দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 24

বিভিন্ন নফল নামাযের বর্ণনা

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 24


ইশ্রাকের নামায

সময় : ইশ্রাকের নামাযের সময় হল সূর্য উদয় হওয়ার পর এক দেড় ঘণ্টার মধ্যবর্তী সময়।
নিয়ম : ইশ্রাকের নামায আদায়ের নিয়ম হল, ফজরের নামায আদায়ের পর জায়নামাযে বসে দোয়া, দরূদ ও অযীফা-কালাম পাঠ করবে, দুনিয়াবী কোন কাজ-কর্ম বা কথাবার্তায় লিপ্ত হবে না। অতঃপর সূর্য উদয় হয়ে কিছুটা ওপরে উঠলে তখন দু-দুরাক'আত করে চার রাক'আত ইশরাকের নফল নামায আদায় করবে।

হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে, মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন“যে ব্যক্তি উক্ত নিয়মে ইশরাকের নামায আদায় করবে, মহান আল্লাহ তা'আলা তার ‘আমলনামায় একটি মকবুল হজ্জ এবং একটি ওমরাহ্ ছাওয়াব দান করবেন।” islamic history bangla.

ইশ্রাকের নামাযের নিয়্যত, উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই ছালাতিল ইশরাকি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা‘অবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।
অর্থ : ইশ্রাকের দুরাক'আত সুন্নত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।

চাশতের নামায

সময় ও নিয়ম : সূর্য আকাশের এক-চতুর্থাংশ উপরে উঠলে এবং রোদের তাপ বৃদ্ধি পেলে চাশতের নামাযের সময় হয়। এ সময়ে দুই, চার, আট কিংবা বার রাক'আত নামায পড়তে হয়, এতে অনেক ছাওয়াব হয়। এ ব্যাপারে রাসূলে কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেন—“যে ব্যক্তি চাতের নামায আদায় করে, মহান আল্লাহ্ তা'আলা তার সকল প্রকার সগীরা গুনাহ্সমূহ ক্ষমা করে দেন।”

চাশতের নামাযের নিয়্যত উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই ছালাতিহা সুন্নতু রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।
অর্থ : চাশতের (দুহার) দুরাক'আত সুন্নত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।

আউয়াবীন নামায

মাগরিবের তিন রাক'আত ফরয ও দুরাক'আত সুন্নত নামায আদায়ের পর ছরাক'আত হতে উর্ধে কুড়ি রাক'আত নফল নামায আদায় করলে অসংখ্য নেকী লাভ হবে। এ ব্যাপারে হাদীস শরীফে মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন—“যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাযের পর অনর্থক কথা-বার্তা না বলে দুরাক'আত আওয়াবীন নামায পড়বে, তার আমলনামায় ১২ বছরের “ইবাদাতের সমান নেকী লেখা হবে।”

আওয়্যাবীন নামাযের নিয়্যত, উচ্চারণ ঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই ছালাতিল আওয়্যাবীনি, সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা‘অবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার
অর্থ : ছালাতুল আওয়্যাবীন দু'রাক'আত সুন্নত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।

নামায শেষ করে নিম্নলিখিত দোয়াটি পাঠ করে মুনাজাত করবে। উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইয়া মুকাল্লিবাল কুলূবি ছাব্বিত ক্বালবী ‘আলা দ্বীনিকা ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি মানুষের মন পরিবর্তনকারী। আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন ।

তাহাজ্জুদের নামায

মধ্যরাত হতে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত জাগ্রত হয়ে যে নামায পড়া হয়, ইসলামী শরী‘য়তের পরিভাষায় তাকে তাহাজ্জুদ নামায বলে। তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ নিদ্রাত্যাগ করা, আর নিদ্রাত্যাগ করে এ নামায পড়তে হয় বলেই এ নামাযকে তাহাজ্জুদ নামায বলে । 

সকল প্রকার নফল নামাযের মধ্যে এ নামাযের গুরুত্ব ও ছাওয়াব অনেক বেশি। কারণ অনেক আরামের ঘুমকে হারাম করে এবং বহু কষ্ট করে এ নামায আদায় করতে হয় । মহান আল্লাহর দরবারে এ নামায সবচেয়ে বেশী প্রিয় । পবিত্র হাদীস শরীফে মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন—“মহান করুণাময় দাতা ও দয়ালু প্রতিদিন শেষ রাতে প্রথম আকাশে এসে নিজ বান্দাদেরকে ডাকতে আল্লাহ্ হে আমার বান্দাগণ! 

এ সময় আমি রহমতের দরজা খুলে দিয়েছি। এখন যে কেউ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব, যে আমার নিকট কিছু চাইবে আমি তাকে তা দান করব। যে আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব।” কোন কোন ইমামগণের মতে তাহাজ্জুদ নামায সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ বলে উল্লেখ রয়েছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর তাহাজ্জুদের নামায আদায় করা মহান আল্লাহর পক্ষ হতে অতিরিক্ত একটি নির্দেশ ছিল। 

তাই নবী (সাঃ) আদিষ্ট হওয়ার পর হতে জীবনে কখনও এ নামায ছাড়েননি। বরং কোন কারণবশতঃ কখনও পড়তে না পারলে পরে এর কাযা আদায় করে নিতেন । তাহাজ্জুদের নামায কমপক্ষে চার রাক'আত এবং উর্ধে বার রাক'আত পড়ার বিধান রয়েছে। তবে দু'রাক'আত পড়লেও তাহাজ্জুদ আদায় হবে। ঘুম হতে জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলে এশার নামাযের সাথে সাথে আদায় করবে। 

এতে যদিও অনেক রাতে পড়ার মত ছাওয়াব হবে না (তবুও এ নামায একেবারে ছেড়ে দেবে না।) তাহাজ্জুদ নামাযের নিয়্যত উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই ছালাতিত্তাহাজ্জুদে সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার । অর্থ : ছালাতুত্ তাহাজ্জুদ দু'রাক'আত সুন্নত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।

এ নামায আদায়ের নিয়ম হল অন্যান্য নফল নামাযের মতই নির ছানা, তা'আউয়্যুয, তাসমিআহ্ পাঠ করে সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন সূরা পড়বে। কোন কোন বুযুর্গ উল্লেখ করেছেন, সূরা ফাতিহার সাথে সূরা ইয়াসীন বা সূরা মুয্যাম্মিল পড়া। আবার কেউ কেউ সূরা ফাতিহার সাথে তিনবার সূরা ইখলাস পড়াকে পছন্দ করতেন।

সালাতুত্ তাওবাহ্

কোন কারণে যদি শরীয়ত বিরোধী কোন কথা বা কাজ করে বসে, তাহলে সাথে সাথে অযূ করে পাক-পবিত্র হয়ে দু'রাক'আত নফল নামা আদায় করে আল্লাহর দরবারে অত্যন্ত কান্নাকাটি সহকারে ক্ষমা চাইবে এবং অনুশোচনা প্রকাশ করে মুনাজাত করবে এবং এরূপ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে যে, আর কোনদিন এরূপ কাজ করব না এবং এরূপ কথা বলব না। খালেদ নিয়্যতে এরূপ তাওবাহ্, ক্ষমা প্রার্থনা ও প্রতিজ্ঞা করলে মহান ক্ষমতার আল্লাহ ঐ গুনাহ মাফ করে দেবেন।

সালাতুত্ তাওবাহর নিয়্যত, উচ্চারণ ঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই ছালাতিত তাওবাতি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা
জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।
অর্থ ঃ তাওবার দুরাক'আত সুন্নত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী
হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।

সালাতুল হাজাত

মহান আল্লাহ তা'আলা মানুষের উদ্দেশ্য সফলকারী ও সাহায্যকারী, সুতরাং মানুষের সকল উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য মহান আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা করা উচিত। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন—
“তোমরা ধৈর্য এবং নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা কর।”

কারও মনে কোন প্রকার উদ্দেশ্য থাকলে, তা পূর্ণ হওয়ার জন্য একান্তভাবে আল্লাহ্ দিকে মনোযোগী হয়ে তার পর নিম্নোক্ত কাজগুলো করবে। অবশ্য ফলপ্রাপ্তির ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে মহান আল্লাহর উপর নির্ভর
করবে।

নিয়ম : সর্বপ্রথম অযূ করে পাক-পবিত্র হয়ে অত্যন্ত কায়মনোবাক্যে দু'রাক'আত নামায আদায় করবে।
সালাতুল হাজাতের নিয়্যত, উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাক'আতাই ছালাতিল হাজাতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।

অর্থ : ছালাতুল হাজাত দুরাক'আত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।
নামাযের সালাম ফেরাবার পর নিজের গুনাহসমূহের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রথমে—
উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা ওয়া তাবারা কাছমুকা ওয়াতা'আলা জাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গায়রুকা।

অর্থ : হে আল্লাহ্! তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। হে মহান প্রভু! তোমার প্রশংসা করছি এবং তোমার যাবতীয় গুণ-গান গাইতেছি। তুমি ছাড়া আমার আর কোন উপাস্য নেই। কয়েকবার পাঠ করে আল্লাহ্র প্রশংসা করবে। এরপর কয়েকবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে। এরপর নিম্নলিখিত দোয়াটি অতি মনোযোগের সাথে কয়েকবার পাঠ করে মহান আল্লাহ্র দরবারে নিজের উদ্দেশ্য সফলের জন্য দোয়া করবে। 

এতে আল্লাহ্র রহমতে উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে, দোয়াটি নিম্নে উল্লেখ করা হল ।
উচ্চারণ ঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালীমুল কারীমু। সুবহানাল্লাহিল ‘আরশিল ‘আযীমু ওয়ালহামদু লিল্লাহি রাব্বিল 'আলামীন। ইয়া 'আলীয় ইয়া হালীমু ইয়া‘আলীমু আসআলুকা মু'জিবাতি রাহমাতিকা ওয়া‘আযায়িমা মাগফিরাতিকা ওয়ানজিয়াতি আমরিকা ওয়াচ্ছালামাতা মিন কুল্লি ইছমিওঁ ওয়ালগানীমাতা মিন কুল্লি বিররিন, আল্লাহুম্মা লা তাদা'লানা যামবান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু ওয়ালা দাইনান ইল্লা জ্বাম্বাইতাহু ওয়ালা হাজাতাম্ মিন হাওয়ায়িজিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাতি ইল্লা ক্বাদ্বাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমীন। ওয়াছাল্লাল্লাহু তা'আলা 'আলা খাইরি খালক্বিহী সাইয়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিওঁ ওয়াআলিহী ওয়াআছহাবিহী আজমাঈন।

অর্থ ঃ মহা সম্মানের অধিকারী ও জ্ঞানী আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। বিশাল আকাশের মালিকের গুণ-গান গাইতেছি। সারা বিশ্বের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্যই সর্বময় প্রশংসা। হে মহান! হে বিজ্ঞ! হে জ্ঞানী! তোমার রহমতের উছিলা প্রার্থনা করছি। তোমারই নিকট সকল প্রকার গুনাহ হতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। 

আমাকে সকল প্রকার গুনাহ হতে ক্ষমা করে দাও এবং আমার সকল প্রকার ঋণ শোধ করার ব্যবস্থা করে। দাও এবং হে পরম দয়ালু! দয়াবান তুমি আমার ইহকাল ও পরকালের সকল প্রয়োজনসমূহ পূরণ করে দাও। আর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর
পরিবার-পরিজনগণের উপর তোমার রহমত বর্ষণ কর।

সালাতুত্তাসবীহ্ বা তাসবীহের নামায

সালাতুত্তাসবীহ্ এমন একটি নামায, যা পড়লে আল্লাহ্ পাক সগীরা-কবীরা, জানা-অজানা, নতুন-পুরাতন সকল প্রকার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। পবিত্র হাদীস শরীফে এ নামাযের অসংখ্য ফযীলত বর্ণিত আছে। যেমন-হুযুর (সাঃ) তাঁর চাচা আব্বাস (রাঃ)-কে এ নামায শিক্ষা দিয়েছেন এবং বলেছেন—“এ নামায পাঠ করলে মহান দয়াময় ও ক্ষমাশীল আল্লাহ্ আপনার পূর্বের, পেছনের, নতুন-পুরাতন, সগীরা-কবীরাহ্, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, জানা-অজানা সকল গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন।”

হুযুর (সাঃ) আরও বলেছেন—“হে চাচাজান! আপনি যদি পারেন তাহলে দৈনিক একবার এ নামায আদায় করবেন। দৈনিক সম্ভব না হলে সপ্তাহে একবার, যদি সাপ্তাহিকভাবে না পারেন তাহলে মাসে একবার, যদি মাসিক ভাবে না পারেন তবে অন্তত বছরে একবার, আর যদি বছরেও সম্ভব না হয় তাহলে যেন সারাজীবনে অন্তত একবার এ নামায আদায় করেন।”

নিয়ম : এ নামায আদায়ের সুন্নত তরীকা হল, একসঙ্গে চার রাক'আত নামাযের নিয়্যত করবে। এ নামাযে যেকোন সূরা পড়া যেতে পারে। তবে এ নামায আদায়ের বিশেষ নিয়ম হল, নামাযের প্রতি রাক'আতে ৭৫ বার করে নিম্নের তাসবীহ্ পাঠ করে চার রাক'আতে মোট তিনশতবার পাঠ করবে।

তাসবীহ্ শরীফ :

উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ।

অর্থ : মহান আল্লাহর জন্যই সকল পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং মহান আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। মহান আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মহান আল্লাহ্ অনেক বড় ।


তাসবীহ পড়ার নিয়ম : 

প্রথম রাক'আতে সানা পড়ার পর ১৫ বার, সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা পাঠ করার পর ১০ বার। রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবীহ পড়ার পর ১০ বার। রুকু হতে উঠে দাঁড়ান অবস্থায় ১০ বার, প্রথম সিজদার তাসবীহ পড়ার পর ১০ বার। প্রথম সিজদাহ হতে উঠে বসা অবস্থায় ১০ বার। দ্বিতীয় সিজদায় গিয়ে তাসবীহ পড়ার পর ১০ বার, মোট ৭৫ বার হল। ঠিক এ নিয়মে বাকী তিন রাক'আতও পাঠ করবে। 

সুতরাং এ হিসেবে চার রাক'আতে মোট ৩০০ বার হয়ে যাবে। কারও কারও মতে এ নামাযে সূরা 'আছর, কাওছার, কাফিরূন ও সূরা ইখলাস, কিংবা সূরা তাগাবুন, হাশর, ছফ ও হাদীদ পড়া উত্তম। তবে সারকথা হল, এ নামাযের জন্য নির্ধারিত কোন সূরার কথা স্পষ্ট প্রমাণাদি নেই । সুতরাং পাঠকের ইচ্ছানুযায়ী যে কোন সূরা দিয়ে পড়া যাবে।

নামায আদায় করার সময় রোকনের তাসবীহ্ পাঠ ভুলবশতঃ বাদ পড়ে গেলে বা কম হলে পরবর্তী রোকনে পড়ে তা পূরা করবে। যেমন রুকুর মধ্যে দশবার তাসবীহ ভুলবশতঃ পড়া হল না এবং সিজদার মধ্যে গিয়ে তা স্মরণ হল, তখন সিজদার মধ্যে দশবারের স্থলে বিশবার পড়ে তা পূরণ করে নিলেই চলবে। মোটকথা মনে রাখবে, এক রাক'আতে মোট ৭৫ বার। 

মূলকথা হল ভুলবশত এক রোকনের তাসবীহ অন্য রোকনে পড়া হলেও চার রাক'আতে মোট তিনশত বার পড়া হলেই ইনশাআল্লাহ নামাযের পূর্ণ ছাওয়াব পাওয়া যাবে। আর চার রাক'আতের তাসবীহ সংখ্যা মিলে ৩০০ বার নাহলে তা সালাতুত্তাসবীহ্ নামায রূপে গণ্য না হয়ে অন্যান্য নফল নামাযে পরিণত হবে।

সালাতুত্তাসবীহ নামাযের নিয়্যত উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা আরবা'আ রাক'আতি ছালাতুত্তাসবীহি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।
অর্থ : সালাতুত্তাসবীহ্ চার রাক'আত নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার ।
Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন !