দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 8

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 8

ঈসা (আঃ)-এর অবতরণ

পবিত্র হাদীস গ্রন্থে পাওয়া যায় যে, একদিন হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) মুসলমানদেরকে নিয়ে দামেস্কের মসজিদে 'আছরের নামাযের প্রস্তুতি নিবেন তখন হযরত ঈসা (আঃ) আল্লাহ্র হুকুমে ঐ মসজিদের মিনারায় এসে অবতরণ করবেন এবং সিঁড়ি পাগানোর জন্য আহ্বান করবেন, সিঁড়ি লাগানো হলে তিনি সে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসবেন। 

পরিচয়প্রাপ্ত হয়ে) হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) হযরত ঈসা (আঃ)-কে নামাযের ইমামতি এবং যুদ্ধের দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিতে চাইবেন কিন্তু হযরত ঈসা (আঃ) উত্তরে বলবেন, নেতৃত্বের জন্য নয় বরং ইসলামের পরম দুশমন মরদুদ দাজ্জালকে হত্যা করার জন্যই আমি এসেছি। আমাকে কেবলমাত্র পাপিষ্ঠ নরাধম দাজ্জালকে হত্যা করার জন্য নির্দেশ দিন। 

পরদিন মরদুদ দাজ্জালের দলের সাথে মুসলমানগণের ভীষণ যুদ্ধ আরম্ভ হবে। এ যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় হবে। ঈসা (আঃ) দাজ্জালকে একটা বল্লম বা নেয়া অর্থাৎ সাধারণ অস্ত্র দ্বারা “বাবে গোদ” নামক স্থানে হত্যা করে ফেলবেন এবং দাজ্জালের অন্যান্য সঙ্গী-সাথীগণ মুসলমানদের হাতে দলবলে ধ্বংস যাবে।

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, ইমাম মাহদী (আঃ) দাজ্জালকে ধ্বংস করে অল্পকিছুদিন পরই ইন্তেকাল করবেন। এরপর হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আঃ) ইমাম মাহদী (আঃ)-এর স্থলাভিষিক্ত হবেন। ঈসা (আঃ) এ দুনিয়াতে চল্লিশ বছর খিলাফতের কাজ পরিচালনা করবেন। ঈসা (আঃ)-এর সময়ে ইয়াজুয-মা'জুয নামক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে। 

ঈসা (আঃ) মুসলমানদেরকে নিয়ে মহান আল্লাহর বিশেষ নির্দেশে “ভূরে সাইনায়” (সিনাই পাহাড়ে) অবস্থান নিবেন । ইয়াজুয-মা'জুযের ফিতনা ও জুলুম শেষ হবার পর সদলবলে মুসলমানদেরকে নিয়ে ঈসা (আঃ) পুনরায় লোকালয়ে ফিরে আসবেন এবং মুসলমানদেরকে নিয়ে সুখ-শান্তিতে স্বর্গরাজ্যের ন্যায় বসবাস করতে থাকবেন। 

এভাবে দুনিয়াবী জীবনে চল্লিশ বৎসর পূর্ণ হলে মহান আল্লাহ্র হুকুমে তিনিও মৃত্যুবরণ করবেন । ঈসা (আঃ)-এর মৃত্যুর পর তাঁকে পবিত্র মদীনা শরীফে নবী (সাঃ)-এর রওজার পার্শ্বে দাফন করা হবে। (পবিত্র মদীনায় রওজা শরীফের পার্শ্বে এখনও একটি কবরের জায়াগা খালি রয়েছে। হাজী সাহেবানরা হয়ত সে স্থানটি দেখে থাকবেন) ।

ইয়াজুয মাজুযের ফিনা

ইয়াজুয-মাজুয ইয়াফেছ ইবনে নূহ (আঃ)-এর বংশধর । এরা দানবের মত তৎকালীন মানব সমাজে এসে মানুষের উপর অনেক অত্যাচার করত। হযরত জুলকারনাইন বাদশাহ্ দু'টি পাহাড়ের মধ্যস্থলে তাদেরকে ভেতরে রেখে চতুর্দিকে শক্ত প্রাচীর দিয়ে আটকে রেখেছেন ।
মহান আল্লাহ্র নির্দেশে যখন তারা দুনিয়াতে আসবে তখন তারা সমগ্র দুনিয়াকে ধ্বংসপুরীতে পরিণত করবে। 

তারা সংখ্যায় এত বেশি হবে যে, তাদের সাথে মোকাবিলা করার মত কারও শক্তি থাকবে না। এ জন্যই হযরত ঈসা (আঃ)-কে তার অনুচর মুসলমানদেরকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার জন্য নির্দেশ দিবেন। ঈসা (আঃ) আল্লাহ্র নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপদ আশ্রয়ে স্বীয় দলবলসহ গিয়ে আশ্রয় নিবেন। কিছুদিন পর মহান আল্লাহ্ নির্দেশে ইয়াজুয ও মা'জুযের দল ধ্বংস হয়ে যাবে। 

এরপর ঈসা (আঃ) সদলবলে লোকালয়ে এসে চল্লিশ বছর কাল রাজত্বের মেয়াদ পূর্ণ হলে মহান আল্লাহ্র নির্দেশে মৃত্যুবরণ করবেন। (দাফন সম্পর্কে পূর্বের আলোচনাটি দেখে নিবেন)। পশ্চিমাকাশে সূর্যোদয় এবং তাওবাহ্র দরজা বন্ধ হযরত ঈসা (আঃ)-এর ইন্তেকালের পর পুনরায় মানুষ দ্বীন-ধর্ম ছেড়ে দিয়ে গোমরাহীর পথে পা বাড়াবে। ধীরে ধীরে নেক্কার বান্দার সংখ্যা কমে যাবে আর মানুষ অন্যায় এবং পাপাচারের পথকেই ভালোবাসবে।

কিছুকাল যাবত এ অবস্থা চলার পর মানুষ দেখতে পাবে সমস্ত আকাশ ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। এ ধূয়ার প্রকোপে মু'মিন লোকদের একপ্রকার সর্দিজ্বর হয়ে তারা মারা যাবে। আর কাফির সম্প্রদায়েরা বেহুঁশ হয়ে থাকবে। স্বাভাবিক নিয়মেই কিছুদিন পর আবার দিন-রাত হতে থাকবে। অতঃপর ঐ বছর কুরবানীর ঈদের পর এমন এক মস্তবড় রাত হবে যা স্বাভাবিক তিন রাতের সমান হবে। islamic history bangla.

সে রাতে মানুষ, জ্বিন, গরু-ছাগল, হাস-মুরগী ইত্যাদি পশুপাখি সকলেই অস্থির হয়ে পড়বে বাইরে যাবার জন্য। কিন্তু এত রাতে বের হবার কোন উপায় থাকবে না। এরপর হঠাৎ করে মানুষ দেখতে পাবে যে, সামান্য আলো নিয়ে সূর্য পশ্চিমাকাশে উদিত হয়েছে। বেশ কিছুদূর উঠে আবার সূর্য অস্ত যাবে। 

অস্তমিত হবার পর সূর্য আবার স্বাভাবিক নিয়মেই পূর্বদিক হতে উদিত হতে থাকবে। এরপর হতে আর কারও তাওবা কবুল করা হবে না এবং নতুন করেও কোন লোক মুসলমান হতে পারবে না। এতসব আলোচনার উপরও ঈমানের ভিত্তি হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয।

দাব্বাতুল আরদ্বের আত্মপ্রকাশ

তাওবার দরজা বন্ধ হবার পর হঠাৎ একদিন একটি প্রাণীর আবির্ভাব হবে, এ প্রাণীটি অদ্ভুত আকৃতি বিশিষ্ট হবে। যেমন এটি লম্বায় হবে ষাট হাত, মাথা ও শিং হবে গরুর মাথা এবং শিং এর মত। ঘাড় হবে উটের মত লম্বা। কান হবে হাতির কানের মত খুব বড়। বুক দেখতে মনে হবে বাঘের বুক, গায়ের রং হবে বিভিন্ন রকমের। 

লেজ হবে দুম্বার লেজের মত ছোট। আর মুখ হবে মানুষের মুখের মত। সে মানুষের ভাষায় কথা বলবে। বর্তমান সাফা এবং মারওয়া নামক পাহাড়দ্বয় ভূমিকম্পের কারণে ফেটে গেলে এ অদ্ভূত প্রাণীটি সেখান হতে বের হয়ে আসবে। উক্ত প্রাণীটি হবে অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন। সমগ্র পৃথিবী এ প্রাণীটি ভ্রমণ করবে। 

ভ্রমণের সময় উক্ত অদ্ভূত প্রাণীটির হাতে হযরত মূসা (আঃ)-এর মো'জিযা সম্বলিত সে লাঠিটি থাকবে এবং হযরত সুলায়মান (আঃ)-এর হাতের আংটি। উক্ত লাঠি দ্বারা সে মু'মিনদের কপালে একটি দাগ টেনে দিবে আর কাফির বেঈমানদের কপালে একটি দাগ টেনে দিবে, এতে কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে। খুব দ্রুততার সাথে এ কাজ সমাধা করার পর উক্ত অদ্ভুত প্রাণীটি অদৃশ্য হয়ে যাবে।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন