দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 9

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 9

কিয়ামত বা মহাপ্রলয়

দাব্বাতুল আরদ্ধ নামক অদ্ভূত প্রাণীটি অদৃশ্য হয়ে যাবার কিছুদিন পর হঠাৎ করে দক্ষিণ দিক হতে সমগ্র পৃথিবীতে একটি আরামদায়ক মৃদু বাতাস বইতে থাকবে। এতে বাকি সকল মু'মিনের বগলে একটি অসুখ দেখা দিবে, যার ফলে সকল মু'মিনরাই মারা যাবে। তখন সমগ্র পৃথিবীতে হাবশী কাফিরদের রাজত্ব চলবে। সে কাফির সম্প্রদায়ের লোকেরা এত জালেম এবং মূর্খ হবে যে, তারা পবিত্র কা'বা ঘরকে নিশ্চিহ্ন করে
ফেলবে। কিয়ামত শব্দের অর্থ কি ?

এরপর সমগ্র পৃথিবীতে অভাব অনটন দেখা দিবে। কিন্তু সে সময় বর্তমান সিরিয়া নামক স্থানে সকল প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খুবই সস্তায় পাওয়া যাবে। ফলে পৃথিবীর সকল মানুষ সিরিয়ার দিকে যাত্রা করবে। এরপর যারা অবশিষ্ট থাকবে তাদেরকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক হতে একটি অগ্নিশিখা এসে ধাওয়া করে সিরিয়ার দিকে নিয়ে যাবে। সেখানে সকলে তিন/চার বছর পর্যন্ত অবস্থান করবে। সকল লোক সিরিয়াতে কাজ করতে থাকবে। 

এভাবে একদিন তথা ১০ই মুহাররম শুক্রবার সকলেই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকবে, তখন মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইস্রাফিল (আঃ) সিঙ্গায় ফুঁক দিবেন। আওয়াজ শুনে সকল লোক আতঙ্কিত হয়ে পড়বে। শিঙ্গার আওয়াজ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। 

এ অবস্থা দেখে মানুষ বেহুঁশ হয়ে এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করতে থাকবে কিন্তু সিঙ্গার আওয়াজ এতই বিকটতর হতে থাকবে যে, মানুষ বেহুঁশ হয়ে এক পর্যায়ে মারা যাবে এবং সকল সৃষ্ট জগৎসমূহ ধ্বংস হয়ে যাবে। 

সেদিন বা সে সময়ে মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ছাড়া একটি প্রাণী পর্যন্ত কোথাও থাকবে না। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদে ঘোষণা দেয়া হয়েছে—“ঐদিন (তথা কিয়ামতের দিন) মানুষ পতঙ্গের ন্যায় বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে আর পাহাড়সমূহ ধূনা তুলার মত ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে।”
এমতাবস্থায় চল্লিশ বছর কেটে যাবে। পুনরায় মহান আল্লাহর হুকুমে ইস্রাফীল (আঃ) দ্বিতীয় বার সিঙ্গায় ফুঁৎকার দিলে হাশরের মাঠ প্রস্তুত হয়ে যাবে। 

এভাবে চল্লিশ বছর কেটে যাওয়ার পর পুনরায় ইস্রাফীল (আঃ) তৃতীয় বার সিংগায় ফুঁৎকার দিবেন। এবার মানুষ উলঙ্গ অবস্থায় বিভিন্ন আকৃতি-প্রকৃতি নিয়ে হাশরের মাঠে স্বীয় দুনিয়াবী জীবনের সকল কাজ-কর্মের হিসাব-নিকাশ দান করার জন্য সমবেত হবে।

হাশরের মাঠে মানুষ ১২টি কাতারে বিভক্ত হবে

হাশরের ময়দানে বান্দা তার দুনিয়াবী জীবনের কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ দেয়ার জন্য নিজেদের কর্মফল অনুযায়ী হাশরের মাঠে উঠতে থাকবে।
এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদে মহান আল্লাহ্র ঘোষণা হল— “শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হলে মানুষ হাশরের মাঠে দলে দলে বিভক্ত হয়ে উঠবে।” হাশরের ময়দান কোথায় অবস্থিত ?

১। দুনিয়ার জমিনে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী লোকেরা বানরের আকৃতিতে উঠবে। ২। দুনিয়ার জমিনে থেকে হারাম বস্তু ভক্ষণকারী লোকেরা শূকরের আকৃতিতে উঠবে। ৩। দুনিয়ার জমিনে অন্যায়ভাবে বিচারকারীগণ অন্ধের আকৃতিতে উঠবে। ৪। মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারী লোকেরা আগুনে পুড়ে ক্ষত-বিক্ষত দেহাকৃতি নিয়ে উঠবে। 

৫। যে সব আলেম লোকদের কথায় এবং কাজে মিল ছিল না তাদের মুখ হতে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে। কারণ তার জিহ্বা লম্বা হয়ে বুক পর্যন্ত ঝুলতে থাকবে, জিহ্বাকে ছোট করার জন্য জিহ্বা কাটার কারণে রক্ত প্রবাহিত হওয়া অবস্থায় উঠবে। ৬। 'ইবাদাত-বন্দেগীতে অহংকারী লোকেরা অন্ধ এবং বোবা হয়ে উঠবে। ৭। জিনাকার লোকদের দু'পা মাথার চুলের সাথে কপালের উপর বেঁধে দেয়া হবে, এ অবস্থায় তারা হাশরের মাঠে উঠবে ।

৮। মসজিদে বসে যেসব লোক গল্পগুজব করেছে সে সকল লোকেরা মাতাল অবস্থায় উঠবে। ৯। চোগলখোরদের জিহ্বা অনেক দূর লম্বা করে উঠান হবে। ১০। আল্লাহ্র নির্দেশ অমান্যকারীরা ও নির্দেশ আদায়ের ব্যাপারে অবহেলাকারী লোকেরা মাতালের মত এদিক-সেদিক হেলা-দোলা অবস্থায় উঠবে। ১১। নিন্দুক, দুর্নাম রটনাকারী, চোগলখোর লোকেরা গন্ধকের জামা পরিহিত অবস্থায় উঠবে। 

১২। সুদখোর লোকেরা শূকরের আকৃতিতে উঠবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট সাহাবাগণ (রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে বাসনা করলেন। নবী কারীম (সাঃ) উত্তরে বললেন-এটি একটি জটিল প্রশ্ন বটে। তবে আমার উম্মত হাশরের মাঠে ১২টি দলে বিভক্ত হয়ে উঠবে। এ ব্যাপারে হযরত মা'আয (রাঃ) হতে এক হাদীসে বর্ণিত আছে—

১। নিজ পাড়া প্রতিবেশী লোকদেরকে কষ্ট দানকারী ব্যক্তি যদি তাওবা না করে মারা যায়, তাহলে সে লোক হাত-পা বিহীন অবস্থায় উঠবে। ২। নামাযে অলসতাকারী লোক বিনা তওবার মারা গেলে জানোয়ার এবং শূকরের আকৃতিতে উঠবে। ৩। যারা মালের যাকাত আদায় না করবে তারা সাপ-বিচ্ছুতে পরিপূর্ণ বিশাল পেট বিশিষ্ট হয়ে উঠবে। ৪। ক্রয়-বিক্রয়ের সময় যারা মিথ্যা বানোয়াটি করবে সে সকল লোকদের মুখ হতে রক্ত এবং আগুন বের হতে থাকবে আর তাদের পেটের নাড়ি-ভূঁড়িসমূহ হাশরের মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকবে। 

৫। মহান আল্লাহকে ভয় না করে যে সব লোক চোখের আড়ালে পাপ কাজ করবে তাদের শরীর হতে পঁচা মৃতদেহ হতেও বেশি দুর্গন্ধ বের হবে। ৬। মিথ্যা প্রদানকারী লোকেরা গলা কাটা অবস্থায় উঠবে। ৭। সত্য কথা গোপনকারী লোকদের মুখ হতে পুঁজ পড়তে থাকবে। 

৮। জিনাকার লোকদের কপালের চুলের সাথে দু'পা বাঁধা অবস্থায় উঠবে আর তাদের লজ্জাস্থান হতে পুঁজ এবং রক্ত ঝরতে থাকবে। ১। ইয়াতীমের মাল নষ্টকারী লোকদের মুখ, কান, চোখ বিকৃত রং এবং পেট আগুনে ভর্তি অবস্থায় উঠবে। 

১০। পিতা-মাতাকে কষ্ট দানকারী নাফরমান লোকেরা শ্বেত-কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত অবস্থায় উঠবে। ১১। মদ-শরাব ইত্যাদি নেশাকারী লোকদের দাঁত হবে ষাঁড়ের শিং এর মত লম্বা আর তাদের ওষ্ঠদ্বয় বুকের উপর ঝুলে থাকবে এবং তাদের জিহ্বা পেট ও উরুর উপর লম্বালম্বীভাবে থাকবে। পেট হতে গলিত ধাতু বের হবে। 

১২। পূণ্যবান লোকেরা এমনভাবে কবর হতে উঠে হাশরের মাঠের দিকে যাবে যে, তাদের চেহারা আলোকোজ্জ্বল নূরের মত উজ্জ্বল হবে। সেদিন নেককার লোকেরা বিদ্যুৎ গতিতে পুলছিরাত পার হয়ে বেহেশত উদ্যানে প্রবেশ করবে। এ সকল নেক্কার লোকদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআন মজিদে ইরশাদ করেন যে—“মহান আল্লাহ্ ঐ সকল নেককার বান্দাদের উপর সন্তুষ্ট আর ঐ সকল নেককার বান্দাগণও আল্লাহ্র উপর সন্তুষ্ট। তারা ঐ সকল লোক যারা তাদের স্বীয় প্রভুকে ভয় করেছে।”

অতঃপর সকলের কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ নেয়া হবে। এর পর ন্যূনতম ঈমানের অধিকারী লোকও স্বীয় কর্মফল অনুযায়ী শাস্তি ভোগের পর শেষ পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ করবে। আর যাদের কোনরূপ ঈমান থাকবে না তারা চীরজীবনের জন্যই দোযখবাসী হবে। হিসাবকার্য শেষ করে সকলকে স্বীয় কৃতকর্ম অনুযায়ী ফলাফল দান করার পর মৃত্যুকে বেহেশত-দোযখের মধ্যখানে রেখে পশুর আকৃতি ধারণ করিয়ে জবাই করা হবে। 

এরপর সকলকে বলা হবে, তোমরা যে যেখানে স্থান পেয়েছ সেখানেই বসবাস করতে থাক। কারণ তোমাদের আর কোনরূপ মৃত্যু হবে না। উল্লিখিত আলোচনাসমূহ দিবালোকের ন্যায় সত্য, এ কথা স্বীকার করা ঈমানের পরিচায়ক। সুতরাং এ ব্যাপারে বিশ্বাস স্থাপন করা সকলের জন্যই
ফরয।

তাকদীরের উপর বিশ্বাস

তাকদীরের উপর বিশ্বাস স্থাপন করার অর্থ হচ্ছে, মানুষের সকল কর্মের ফলাফল ভালো হউক, খারাপ হউক অর্থাৎ যখন সে যে অবস্থায় থাকে মহান আল্লাহ্র ইচ্ছানুযায়ী থাকে এবং এ বিধানসমূহ মহান আল্লাহ্ পাক কর্তৃক নির্ধারিত এ কথা অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। এ ব্যাপারে পবিত্র হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেন— “মহান আল্লাহ্ পাক এ বিশ্ব ভুবন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সমস্ত সৃষ্ট জীবের ভাগ্য নির্ধারণ করে রেখেছেন।”

মহান আল্লাহ্র ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হয় না। কারণ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহই সর্বময় শক্তির একচ্ছত্র অধিকারী। তাই তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সকল ভালো-মন্দ হয়ে থাকে। তিনি যাকে ইচ্ছা কোনকিছুর অধিপতি করেন, আবার যাকে খুশি পথের ভিখারী করে দেন। মহান আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে হিদায়াতের রাস্তা দান করেন আর যাকে ইচ্ছা করেন না কেউই তাকে হিদায়াত করতে পারে না। 

এসব বিষয়ের প্রতি যাদের বিশ্বাস নেই তাদেরকে মৃদু ধমক দিয়ে রাসূলে কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেন—“মহান আল্লাহ্র নির্ধারিত বিধানের উপর যারা বিশ্বাসী নয়, তাদের উচিত তারা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য খোঁজ করা।”
উল্লিখিত আলোচনা হতে বুঝা যায় যে, মহান আল্লাহ্র বিধানসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা সকলের উপর অবশ্য কর্তব্য। 

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কালামে ঘোষণা করেন— “যত প্রকার বালা-মুসীবাত তোমাদের উপর এসে থাকে, তা দুনিয়ার কোন অংশে কিংবা তোমাদের নিজেদের উপর হউক তা প্রকাশ পাবার পূর্বেই আমার নিকট লিপিবদ্ধ আছে।” অর্থাৎ কখন, কোথায়, কার উপর কি ধরনের বিপদ বা বালা-মুসীবাত কিভাবে আসবে এ সবকিছু আগে হতেই মহান আল্লাহ তা'আলা নির্ধারণ করে রেখেছেন ।

মানুষ যেহেতু আশরাফুল মাখলুকাত, সুতরাং তারা ভালো-মন্দ বিচার- বিভেদ করার ক্ষমতা রাখে। সে যখন ভালো কাজ করে ভালো ফলাফল পাবে তখন তাকে বুঝতে হবে যে, এটি আমার প্রভুর পক্ষ হতে হয়েছে। 

আর যখন খারাপ কাজ করে খারাপ ফলাফল পাবে তখনও তাকে একথা বিশ্বাস করতে হবে যে, খারাপ কাজের ফলাফল খারাপ হয়েছে, তাও মহান আল্লাহ্র পক্ষ হতেই হয়েছে। আর যদি চেষ্টাতে বিফল হয়ে যায় তাও ধারণা করতে হবে যে, এ কাজের ফলাফল আমার তাকদীরে নেই। 

তাই চুপচাপ অলস হয়ে বসে না থেকে বিবেক-বিবেচনা করে ভাল কাজ করার জন্য সবসময় মন-মানসিকতাকে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও বাধ্য করতে হবে। আর খারাপ, অন্যায়, গর্হিত কাজসমূহ হতে বিরত থাকার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা-সাধনা করতে হবে। আর তাকদীরের এ সবের উপর ঈমানের পরিচায়ক হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করা ফরয।

পুনরুত্থানের উপর বিশ্বাস

মানব জীবনের শেষ পরিণতি মৃত্যু। এ মৃত্যুর হাত থেকে কোন লোকই রক্ষা পাবে না। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদে ঘোষণা হয়েছে – “প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।” দেখা যায় জগতের শুরুতে যারা ছিল তাদের কেউই বেঁচে নেই। আজ যারা জীবিত ভবিষ্যতে তারাও থাকবে না। 

এমনিভাবে মহান আল্লাহ্র নির্দেশে হযরত ইস্রাফিল, (আঃ) প্রথমবারে সিঙ্গায় ফুঁক দিলে সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে, দ্বিতীয়বারে ফুঁক দিলে হাশরের মাঠ তৈরি হবে, এরপর তৃতীয়বারে ফুঁক দেয়ার সাথে সাথে সকল প্রাণীসমূহ কবর হতে উঠে (বিভিন্নভাবে যা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে) স্বীয় জীবনের কাজ-কর্মের হিসাব দেয়ার জন্য মহান প্রভু আল্লাহ্র সম্মুখে হাশরের মাঠে জীবিতাবস্থায় উঠতে থাকবে। 

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদে ঘোষণা হয়েছে—“অতঃপর যখন (তৃতীবার) সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে তখন সকলকেই স্বীয় কবরসমূহ হতে (হাশরের মাঠে) তাদের প্রভুর সম্মুখে দলে দলে উপস্থিত হতে হবে।” সেদিনের অবস্থা হবে খুবই ভয়ঙ্কর। সূর্য হবে মাথার উপর অতি নিকটবর্তী, জমিন হবে তামার। সূর্যের তাপে তামার জমিন উত্তপ্ত হয়ে মানুষ স্বীয় কর্মানুপাতে ঘর্মাক্ত হয়ে কারও পায়ের গিরা পর্যন্ত, কারও হাঁটু পর্যন্ত, কারও উরু পর্যন্ত এভাবে বুক, গলা এমনকি কোন কোন লোক ঘামের পানিতে সাঁতরাতে থাকবে।

হাশরের মাঠে উপস্থিতির সময় হতেই মূলত মানুষের সত্যিকারের জীবন আরম্ভ হবে। দুনিয়ার এ জিন্দেগী মুসাফির লোকদের মত সামান্য সময়ের জন্য বিশ্রামের জায়গা মাত্র। এ মুসাফিরখানাতে এসে পরকালীন জীবনের জন্য কিছু পাথেয় তৈরি করার জন্যই মানুষের সৃষ্টি। এভাবে একটা নির্দিষ্ট সময় কেটে যাওয়ার পর মৃত্যুর মাধ্যমে মুসাফেরী জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে। 

এরপর সৃষ্টির প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ) হতে ইস্রাফীল (আঃ)-এর সিঙ্গা ফুঁক দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত যে শিশুটির জন্ম হবে সে শিশুটিও ধ্বংস হয়ে যাবে এবং শেষ বিচারের তথা হাশরের মাঠে উপস্থিত হয়ে দুনিয়ার জিন্দেগীর সকল কর্মের হিসাব দেয়ার জন্য মহান প্রভুর সম্মুখে উপস্থিত হতে হবে। 

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদের অন্য আয়াতে ঘোষণা হয়েছে— “এ মাটি হতেই তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং পুনরায় এ মাটিতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেব এবং আবার এ মাটির ভেতর হতেই তোমাদেরকে বের করে আনা হবে। সুতরাং বুঝা গেল যে, প্রতিটি প্রাণীকেই জীবন-মৃত্যুর পর হাশরের মাঠে একত্রিত হতে হবে। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদের অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে—“যেদিন তোমাদেরকে মহান আল্লাহ্ তা'আলা একত্রিত করবেন, অবশ্যই সে দিনটির আগমন সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই।”

কারও অন্তরে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, মৃত্যুর পর এ জড়দেহ কোন পশু-পাখি খেয়ে ফেলেছে, সাগরের পানিতে মাছের পেটে চলে গেছে। আগুনে পুড়ে গেছে বা পোড়ানো হয়ে ছাই-ভস্ম করা হয়েছে। কবরের মাটির সাথে মিশে গেছে, এসব ক্ষতবিক্ষত বা নিশ্চিহ্ন দেহ আবার কিরূপে একত্রীভূত করা হবে ? 

এ প্রশ্নের একটি উত্তরই যথেষ্ট যে, যখন কিছুই ছিল না মহান আল্লাহ্ অস্তিত্বহীনতা হতে অস্তিত্ব দান করলেন সে অস্তিত্ব যতই বিনষ্ট হউক না কেন তাকে পুনরুত্থান করা মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর পক্ষে অবশ্যই সম্ভব।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন