দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 12

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 12

মৃত্যু যন্ত্রণা

মৃত্যুর সময় ইহলৌকিক কোন কঠিন বিপদাপদের সম্মুখীন না হয়ে যদি রূহ কবজ করার যন্ত্রণা পেতে হত তাহলেও সে যন্ত্রণার ভয়ে মানুষ দুনিয়ার সকল আনন্দ ত্যাগ করা উচিত ছিল। কারণ যদি মানুষের মধ্যে এ ভয় থাকে যে, কোন ডাকাত দল এসে যে কোন সময় আক্রমণ করে তার সকল ধন-সম্পদ নিয়ে যেতে পারে। মৃত্যু যন্ত্রণা কম হওয়ার আমল ।

এ ভয়ে মানুষ দুনিয়ার খানা-খাদ্য, ঘুম ত্যাগ করে ফেলবে, কারণ কখন ডাকাত আক্রমণ করে বসে, অথচ ডাকাত আক্রমণ করার কোন নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু মৃত্যু অবধারিত এবং যে কোন মুহূর্তে আসতে পারে এতে কারও কোন সন্দেহ নেই । 

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে—“প্রতিটি আত্মাকেই (জীবন) মৃত্যুর স্বাদ' গ্রহণ করতে হবে।” কিন্তু মানুষ দুনিয়ার মোহে এতই বিভোর যে, মানুষের মৃত্যু সম্পর্কে কোন ভয় নেই। মৃত্যুর সময় যখন প্রাণবায়ু বের করা হবে সে সময় যে কষ্ট হবে, সে কষ্ট তলোয়ারের আঘাতে টুকরা টুকরা হওয়ার কষ্ট হতেও অনেক কঠিন হবে। আবার কারও মতে শরীরের কোন অংশে আগুন লাগলে যেরূপ সমস্ত শরীরে কষ্ট অনুভব হয়ে থাকে। 

মানবের জীবন বা প্রাণ শরীরের সমস্ত স্থানের সাথে সঞ্চারিত রয়েছে, তাই মৃত্যুর সময় প্রাণ বের করার সময় শরীরের প্রতিটি অংশে এর ব্যথা-বেদনা অনুভব হয়। আর এর প্রভাবে সমস্ত শরীরই অবশ হয়ে পড়ে এবং তার বাকশক্তি বন্ধ হয়ে যায়, নীরব-নিস্তেজ হয়ে পড়ে। 

যারা মৃত্যুবরণ করেছে তারাই কেবল মৃত্যু যন্ত্রণা যে কত কষ্টকর তা অনুভব করেছে। এছাড়া আর কেউ এ যন্ত্রণা অনুভব করতে পারে না। কিন্তু নবী (আঃ)-গণ নবুওয়্যাতীর আলোকে এর সম্যক ধারণা বুঝতে পেরেছেন।

মৃত্যু যন্ত্রণা সম্পর্কে হাদীস ও বুযূর্গগণের উক্তি

হযরত ঈসা (আঃ) বলেন—হে বন্ধুগণ! মহান আল্লাহ্র নিকট দোয়া কর, তিনি যেন আমার উপর মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ করে দেন। মৃত্যু যন্ত্রণা যে কত কঠিন তা বুঝতে পেরে সে ভয়ে আমি জীবন্ত মরা হয়ে রয়েছি। ইন্তেকালের সময় রাসূলে কারীম (সাঃ) এ দোয়া করেছিলেন— “হে আল্লাহ্! মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ কর। মুমূর্ষু রোগীর জন্য দোয়া ।

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, যার উপর মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ হয়, তার (সৌভাগ্যের) কোন আশা আমি করি না। কারণ রাসূলে কারীম (সাঃ)-এর পবিত্র দেহ হতে জীবন বের হবার সময় মৃত্যু যন্ত্রণা আমি নিজ চোখে দেখেছি। সে সময়ে তিনি বলতেছিলেন—“হে আল্লাহ্! অস্থি ও শিরাসমূহ হতে তুমি রূহ টেনে বের করছ এ যন্ত্রণা আমার উপর সহজ কর।” মৃত্যু যন্ত্রণা ও কষ্টের কথা উল্লেখ করে রাসূলে কারীম (সাঃ) ইরশাদ করেন—“তলোয়ার দ্বারা তিনশত আঘাত করলে যেরূপ যন্ত্রণা হয়, মৃত্যু যন্ত্রণা তদ্রূপ।” 

অন্যত্র তিনি বলেন — “যে মৃত্যু সবচেয়ে সহজ হয় তাও লোহার টুকরা পায়ে বিধলে যেরূপ কষ্ট হয়, উহা আর বের করা সম্ভব নয়।”
কোন এক রোগীর মৃত্যুর সময় রাসূলে কারীম (সাঃ) তার পাশে গিয়ে বলতে লাগলেন—“তার মৃত্যু যন্ত্রণা সম্পর্কে আমি অবগত আছি। তার শরীরে এমন কোন শিরা-উপশিরা নেই যাতে পৃথক পৃথকভাবে যন্ত্রণা অনুভব হয় না।” হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “হে মুসলমানগণ! কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিহত হও। 

কারণ, বিছানায় পড়ে থেকে মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করা হতে হাজার হাজার তলোয়ারের আঘাতজনিত মৃত্যুকে আমি অনেক সহজ মনে করি।” বনী ইসরাইলের কতক লোক এক কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাবার সময় দোয়া করল-“হে আল্লাহ্ পাক! একজনকে জীবিত করে তোল।” মহান আল্লাহ্ পাক একজনকে জীবিত করলেন। সে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলতে লাগল—“হে লোকগণ! তোমরা আমার নিকট কি চাও? পঞ্চাশ বছর হল আমার মৃত্যু হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার শরীরে মৃত্যু যন্ত্রণার কষ্ট অনুভব করছি।” 

কোন এক সাহাবী (রাঃ) বলেন – “মুসলমান নিজের 'আমল দ্বারা যে মরতবা লাভ করতে পারে না, আল্লাহ্ তা'আলা তাকে মৃত্যু যন্ত্রণা দিয়ে সে মরতবায় উন্নীত করেন। আর কাফির সৎকাজ করে থাকলে আল্লাহ্ এর বিনিময়ে তার উপর মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ করে দেন, যাতে তার পরকালে কোন প্রাপ্য না থাকে।" হাদীস শরীফে আছে—“হঠাৎ মৃত্যু মুসলমানের পক্ষে আরাম এবং কাফিরের পক্ষে ক্ষোভ।” 

হাদীস শরীফে আছে, মূসা (আঃ)-এর মৃত্যুর সময় মহান আল্লাহ্ পাক মূসা (আঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন- “মৃত্যু যন্ত্রণা কেমন মনে করছ?" মূসা (আঃ) উত্তর দিলেন- “জীবন্ত একটি পাখীকে ভাজা করার মত। 

যেমন সে উড়ে যেতে পারে না বা মরেও যন্ত্রণা হতে মুক্তিলাভ করতে পারে না।” হযরত কাবুল আহবার (রাঃ) হযরত ওমর (রাঃ)-কে মৃত্যু যন্ত্রণার অবস্থা প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দিলেন—“কাঁটা যুক্ত একটি ডালা পেটের ভেতর ঢুকে গিয়ে এক একটি রগে বিধে গেলে সেটি টেনে বের করতে যেরূপ কষ্ট হয়, মৃত্যু যন্ত্রণাও তদ্রূপ।"

মৃত্যুর ভয়াবহতা

প্রাণ বের হবার সময় যে কষ্ট সহ্য করতে হয় তাছাড়া আরও তিনটি ভীষণ ভয়াবহতা মানুষের সামনে উপস্থিত হয়ে থাকে ।
প্রথম ভয়াবহতা : মালাকুল মাউত হযরত আযরাঈল (আঃ)-এর রূপ দর্শন। হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) মালাকুল মাউতকে বললেন—“তুমি প্রাণীর প্রাণ বের করার সময় যে রূপ ধারণ কর আমি তোমার সে রূপ দেখতে চাই।” মালাকুল মাউত উত্তর দিলেন—“আপনি সহ্য করতে পারবেন না।” হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বললেন—“তোমার সে রূপ আমাকে অবশ্যই দেখাতে হবে।”

অবশেষে মালাকুল মাউত সে রূপ ধারণ করলেন। পাপীদের প্রাণ হরণকালে তার রূপ কিরূপ ভয়াবহ হবে তা প্রকাশ পেল । সামনেই এক কাল বর্ণের ভীষণ আকার এক ব্যক্তি দাঁড়ানো, মাথায় তার মোটা মোটা রুক্ষ্ম চুল। পরণে কাল পোশাক, আগুনের ফুলকি ও ধোয়া তার মুখ হতে বের হচ্ছে। 

এরূপ অবস্থা দেখে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন । কিছুক্ষণ পর তার হুঁশ হল এবং মালাকুল মাউত নিজের স্বাভাবিক রূপ ধারণ করলেন । তখন ইব্রাহীম (আঃ) বললেন—“হে ভাই মালাকুল মাউত! পাপীদেরকে তোমার এ ভীষণ চেহারা দেখানোই তার জন্য অনেক বড় শাস্তি।”

নেককারদের মৃত্যুর সময় আযরাঈলের আকৃতি

নেককার লোকগণ মৃত্যুর সময়ে মালাকুল মাউতকে এরূপ ভীষণ আকৃতিতে দেখে না, বরং স্বাভাবিক মনোরম আকৃতিতে দেখে থাকে । সে সময় নেককার লোকগণ যে সব আরাম ভোগ করে থাকে, তা বাদ দিলেও মালাকুল মাউতের মনোরম আকৃতি দেখাই তার পুণ্যের জন্য যথেষ্ট পুরস্কার । হযরত সুলায়মান (আঃ) মালাকুল মাউতকে প্রশ্ন করলেন—তুমি : লোকদের প্রতি সমান বিচার কর না কেন ? 

একজনের প্রাণ তাড়াতাড়ি বের কর, আবার অন্যকে অস্থিরভাবে নাড়াচাড়া করে আস্তে আস্তে মেরে থাক? হযরত আযরাইল (আঃ) উত্তর দিলেন – “এ সম্পর্কে আমার কোন স্বাধীন ক্ষমতা নেই। প্রত্যেক ব্যক্তির নামের তালিকা আমি পেয়ে থাকি, এতে যেভাবে প্রাণ হরণের নির্দেশ থাকে আমি সে অনুযায়ী কাজ করে থাকি।”

মালাকুল মাউত সম্পর্কে বুযুর্গগণের উক্তি

হযরত ওহাব ইবনে মুনাব্বেহ (রহঃ) বলেন—“কোন একদিন এক বাদশাহ ঘোড়ায় ছাওয়ার হয়ে বের হতে ইচ্ছা করলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি পোশাক চাইলে পোশাক আনা হল। সে পোশাক তার পছন্দ হল না, অবশেষে তিনি সর্বোৎকৃষ্ট পোশাক পরিধান করলেন। এরপর অনেকগুলো ঘোড়া তার সামনে উপস্থিত করা হয়। সেগুলোও তার পছন্দ হল না, শেষ পর্যন্ত বাদশাহ সবচেয়ে উৎকৃষ্ট একটি ঘোড়া বেছে নিয়ে তাতে আরোহণ করলেন। 

এরপর সুসজ্জিত সৈন্যবাহিনী নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলেন । অহংকারের কারণে আর কারও দিকে দৃষ্টিপাত করলেন না। এমন সময় মালাকুল মাউত মলিন পোশাক পরে দরিদ্র বেশে বাদশাহর সামনে এসে সালাম দিলেন। বাদশাহ তার সালামের উত্তর দিলেন না। মালাকুল মাউত বাদশাহর ঘোড়ার লাগাম ধরে ফেললেন। অবস্থা দেখে বাদশাহ বললেন “কতবড় বেয়াদবী। একে দূরে সরিয়ে দাও।”

 মালাকুল মাউত বললেন “মহারাজ! আপনার নিকট আমার কিছু কথা আছে।” বাদশাহ বললেন “থাম! আমি ঘোড়া হতে নেমে নেই।” মালাকুল মাউত বললেন “না! আমি এখনই বলব।” বাদশাহ বললেন, “তবে বল।” মালাকুল মাউত বাদশাহর কানে কানে বললেন “আমি যমদূত” এ মুহূর্তেই তোমার প্রাণ বের করার জন্য আমি এসেছি।” 
 
 একথা শুনা মাত্র বাদশাহর চেহারা মলিন হয়ে গেল; মুখে আর কোন কথা বলার মত শক্তি তার রইল না। অনেক কষ্টে বাদশাহ বলতে লাগলেন—“ঘরে গিয়ে স্ত্রী-পুত্রদের নিকট হতে বিদায় নেয়ার জন্য কিছুটা সময় দিন।” মালাকুল মাউত তাকে সময় দিতে অস্বীকার করলেন এবং সাথে সাথে বাদশাহ্র প্রাণ হরণ করে নিলেন।
 
 বাদশাহ ঘোড়ার উপর হতে পড়ে গেল আর মালাকুল মাউতও চলে
গেলেন । মালাকুল মাউত একজন মুসলমানকে দেখে বললেন – “আপনাকে একটি গোপন কথা শুনাতে চাই।” সে ব্যক্তি বললেন “কি কথা? বলুন!” মালাকুল মাউত বললেন “আমি যমদূত!” সে মুসলমান লোকটি বললেন “মারহাবা, অনেকদিন যাবৎ আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম! তাই আপনার আগমন আমার জন্য খুবই প্রিয়, এখন আমার প্রাণ বের করুন।”

মালাকুল মাউত বললেন “আপনার যে সব প্রয়োজনীয় কাজ রয়েছে সেগুলো আগে সমাধা করে নিন।” সে লোকটি বলল “আল্লাহকে দেখা ব্যতীত প্রয়োজনীয় কোন কাজ আমার আর বাকি নেই।” মালাকুল মাউত বললেন – “এখন আপনি যে অবস্থায় ইচ্ছা করেন সে অবস্থায়ই আমি আপনার প্রাণ বের করে নেব।” মুসলমান লোকটি বলল – “তবে এতটুকু বিলম্ব করুন যাতে আমি অযূ করে নামায আরম্ভ করতে পারি। 

আমি যখন সিজদারত অবস্থায় থাকব তখন আমার প্রাণ বের করে নেবেন।” মালাকুল মাউত তাই করলেন। হযরত ওহাব ইবনে মুনাব্বেহ (রহঃ) আরও বলেন, এক দেশে এক মহাপরাক্রান্ত বাদশা ছিলেন, তার মত পরাক্রমশালী বাদশাহ এ জগতে আর ছিল না। 

মালাকুল মাউত তার রূহ কবয করে আকাশে উপস্থিত হলে ফিরিশতাগণ জিজ্ঞেস করলেন-হে আযরাইল! প্রাণ হরণ করার সময় কখনও কি তোমার মনে কারও জন্য দয়া হয়েছিল? মালাকুল মাউত বলল, হ্যাঁ এক গহীন জঙ্গলে এক গর্ভবতী মহিলা অসহায় অবস্থায় পড়েছিল। 

এমন সময় তার একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হল। ঠিক সে সময় ঐ মহিলার প্রাণ হরণ করার জন্য আমার প্রতি নির্দেশ হল । সে অবস্থায় ঐ সদ্যপ্রসূত শিশুটিকে ধ্বংসের মুখে রেখে আমি উক্ত মহিলার জীবন হরণ করে নিয়ে এলাম। নির্জন বনের সে অসহায় মহিলা এবং তার সে শিশু সন্তানের জন্য আমার মনে দয়ার উদ্রেক হয়েছিল। ফিরিশতাগণ বললেন – “তুমি তো এ বাদশাহকে দেখেছ যার মত পরাক্রমশালী কোন বাদশাহ পৃথিবীতে আর কেউই ছিল না?” 

মালাকুল মাউত বলল—“হ্যা দেখেছি।” ফিরিস্তাগণ বলতে লাগলেন—“এ বাদশাহ ঐ শিশু, যাকে তুমি নির্জন বনে অসহায় অবস্থায় রেখেছিলে।” একথা শুনে মালাকুল মাউত আল্লাহ্র প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করলেন ।

এক সাহাবী (রাঃ) বলেন, পবিত্র শা'বান মাসের ১৫ তারিখ রাতে মালাকুল মাউত একটি তালিকা প্রাপ্ত হন, সে তালিকার মধ্যে ঐ বছর যত লোক মারা যাবে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করা থাকে, কোন লোক বিবাহ-শাদী করতে থাকে, কেউ বা ঝগড়া-বিবাদ করতে থাকে, অথচ তাদের নাম সে মৃত্যু তালিকায় লিপিবদ্ধ আছে।” 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আ’মা (রাঃ) বলেন—“মালাকুল মাউত হযরত সুলায়মান (আঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁর জনৈক সাথীর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিপাত করলেন। মালাকুল মাউত বের হয়ে গেলে সে ব্যক্তি হযরত সুলায়মান (আঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন—“যে ব্যক্তি আমার দিকে দৃষ্টিপাত করলেন তিনি কে?” হযরত সুলায়মান (আঃ) বললেন—“ইনি হলেন হযরত মালাকুল মাউত।”

সে লোকটি বলল মনে হয় মালাকুল মাউত আমার প্রাণ বের করে নেবে। সুতরাং আপনি বাতাসকে নির্দেশ দিন, সে যেন আমাকে হিন্দুস্থানে নিয়ে রেখে আসে। মালাকুল মাউত যেন ফিরে এসে আমাকে না পায় । হযরত সুলায়মান (আঃ) বায়ুকে আদেশ করলেন, বায়ু তাকে সাথে সাথে হিন্দুস্থানে পৌছিয়ে দিল । 

এরপর মালাকুল মাউত পুনরায় এলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি আমার অমুক সঙ্গীর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন কেন ? 
মালাকুল মাউত বললেন—“ঐ সময়ে হিন্দুস্থানে যে ব্যক্তির প্রাণ হরণ করার জন্য মহান আল্লাহ্র নির্দেশ ছিল, অথচ সে ব্যক্তি তখন আপনার দরবারে উপস্থিত ছিল। 

আমি চিন্তা করলাম, এ মুহূর্তে ঐ লোকটি কিভাবে হিন্দুস্থানে উপস্থিত হবে? আমি সেখানে গিয়ে তাকে সেখানেই পেলাম । এতে আমি বড়ই আশ্চর্যান্বিত হলাম । 

মৃত্যুর দ্বিতীয় ভয়াবহতা ঃ পাপ-পুণ্য লিখক ফিরিশ্তাগণকে দর্শন - পবিত্র হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে, মৃত্যুর সময় উল্লিখিত দুফিরিশ্তা মানুষের দৃষ্টিগোচর হয় এবং নেককার ব্যক্তিকে ফিরিশ্তা বলেন—“আল্লাহ্ তোমাকে মঙ্গল দিয়ে পুরস্কৃত করুন। আমাদের সামনে তুমি ভাল কাজসমূহ করে আমাদেরকে খুব আরাম দান করেছ।

অপর দিকে বদকার পাপীদেরকে ফিরিশ্তারা বলেন যে,“আল্লাহ্ তোমাকে অমঙ্গল দান করুন। তুমি আমাদের সামনে অনেক খারাপ কাজ করেছ।” এ কথা শুনার সাথে সাথে তার চক্ষু এমনভাবে উপরের দিকে উঠে যাবে যে, তা আর বন্ধ হবে না।”
মৃত্যুর তৃতীয় ভয়াবহতা : মৃত্যুর সময় লোক বেহেস্ত বা দোযখে তার বাসস্থান দেখতে পায়। 

কারণ তখন মালাকুল মাউত নেককার লোককে বলেন—“হে আল্লাহ্র দোস্ত! তুমি বেহেশতে প্রবেশের সুসংবাদ গ্রহণ কর।” আর পাপী গুনাগারদেরকে বলা হবে—“হে আল্লাহ্র শত্রু! তোমাকে দোযখে প্রবেশের খবর দিচ্ছি।”
মানুষ ইহকালে যত বড় কঠিন বিভীষিকাই দেখুক না কেন, তা কবর ও হাশরের ভয়াবহতার তুলনায় অনেক কম ।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন