দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 18

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 18

যবিউল ফুরুযের পুরুষদের চারজন

পিতার অংশ : পিতার তিন অবস্থা। যেমন—
১। মৃত ব্যক্তির ছেলে বা নাতি (যত নিচে যাবে) থাকলে পিতা সম্পত্তির ছ’ভাগের এক ভাগ অংশ পাবে। ২। মৃত ব্যক্তির মেয়ে বা পুত্রের মেয়ে থাকলে পিতা ছ' ভাগের এক ভাগ, অংশ পাবে যবীউল ফুরু হিসেবে। আর মৃত ব্যক্তির কন্যা বা পুত্রের কন্যার অংশ দেয়ার পর বাকী অংশ আছাবা হিসেবে পাবে।

৩। মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা নাতি-নাতনি ইত্যাদি কেউ না থাকলে পিতা আছাবা হিসেবে সম্পূর্ণ সম্পত্তি পাবে।
দাদার অংশ : মৃত ব্যক্তির পিতা উপস্থিত থাকতে দাদা কোন অংশ পাবে না। তবে পিতা জীবিত না থাকলে দাদারও তিন অবস্থা, অর্থাৎ বাবা জীবিত থাকলে সে অবস্থায় যে অংশ পেত পিতার অবর্তমানে দাদাও ঠিক সে অংশ পাবে।

স্বামীর অংশ : স্বামীর দু'অবস্থা। 

যেমন—
১। স্ত্রীর যদি কোন সন্তান বা সন্তানের সন্তান (যত নিম্নে হউক) না থাকলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পত্তির দু' ভাগের এক ভাগ অর্ধেক পাবে। ২। আর সন্তান ইত্যাদি থাকলে চার ভাগের এক ভাগ পাবে ।
বৈপিতৃক ভাইয়ের অংশ : বৈপিতৃক ভাই হউক বা বোন হউক সম্পত্তির অংশ পাওয়ার ব্যাপারে সকলেই সমান পাবে, এক্ষেত্রে পুরুষ স্ত্রীর দিক দিয়ে কোন পার্থক্য নেই। অতএব তাদের তিন অবস্থা। 

যেমন—১। একজন হলে ছ'ভাগের এক ভাগ পাবে। ২। দু'জন বা এর চেয়ে বেশী হলে তিন ভাগের এক ভাগ পাবে। ৩। মৃত ব্যক্তির সন্তান বা ছেলের সন্তান (যত নিচে হোক) অথবা বাপ বা দাদা থাকলে তারা কিছুই পাবে না । ইসলামিক কাহিনী,
যবিউল ফুরুযের মহিলাদের বারজন
স্ত্রীর অংশ : স্ত্রী একজন হউক বা একাধিক হউক তাদের দু’অবস্থা।
যেমন—

১। স্বামীর কোন সন্তান বা সন্তানের সন্তান (যত নিম্নে হউক) না থাকলে স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ পাবে। ২। আর সন্তান থাকলে আট ভাগের এক ভাগ পাবে ।
কন্যার অংশ : কন্যার তিন অবস্থা। যেমন—

১। কন্যা একজন হলে পিতার সম্পত্তির অর্ধেক পাবে।২। কন্যা দু'জন বা তার চেয়ে বেশী হলে তিন ভাগের দু'ভাগ পাবে । ৩ । মৃত ব্যক্তির ছেলে থাকলে এক ছেলের সমান দু'কন্যায় পাবে
নাতনীর অবস্থা ঃ নাত্নীর (যত নিম্নে হোক) ছ’অবস্থা। যেমন—

১। মৃতের কোন কন্যা না থাকলে এবং নাতনী একজন হলে সে সম্পত্তির অর্ধেক পাবে। ২। নাতনী দু'জন থাকলে সম্পত্তির তিন ভাগের দু'ভাগ পাবে। ৩। মৃতের কন্যা একজন থাকলে নাতনীরা ছ' ভাগের এক ভাগ পাবে। ৪। মৃতের কন্যা দু'জন বা তার চেয়ে বেশী থাকলে নাতনীরা কিছুই পাবে না। 

৫। তবে মৃতের দুই বা ততোধিক কন্যা থাকলে যদি নাত্নীদের সাথে কোন নাতী থাকে এরূপ অবস্থায় নাতনীগণ আছাবা হিসেবে সম্পত্তি পাবে। অর্থাৎ কন্যাদের অংশ নেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি নাতনীগণের মধ্যে নাতনী নাতীর দু'ভাগের এক ভাগ হারে অংশ পাবে। ৬। মৃতের কোন ছেলে থাকলে নাতনীগণ কিছুই পাবে না ।
আপন বোনের অংশ : আপন বোনের ৫ অবস্থা। যেমন—

(১) এক বোন হলে সে ভাইয়ের সম্পত্তির অর্ধেক পাবে। (২) একাধিক বোন হলে তিন ভাগের দু'ভাগ অংশ পাবে। (৩) তাদের সাথে আপন ভাই থাকলে ভাই দু'বোনের সমান অংশ পাবে। (৪) মৃতের কন্যা অথবা পুত্রের কন্যা থাকলে আছাবা হিসেবে অংশ পাবে। অর্থাৎ মৃতের কন্যা বা পুত্রের কন্যাগণ তাদের অংশ নেয়ার পর যা বাকী থাকে আপন বোনগণ তা পাবে। (৫) মৃতের পুত্র বা পৌত্র অথবা বাপ বা দাদা থাকলে আপন বোনগণ কিছুই পাবে না ।

বৈমাতৃক বোনের অংশ

বৈমাতৃক বোনের সাত অবস্থা। যেমন—
(১) এরূপ বোন একজন হলে সম্পত্তির অর্ধেক পাবে। (২) দু'জন বা এর বেশী হলে তিন ভাগের দু'ভাগ অংশ পাবে। তবে যদি মৃতের কোন আপন বোন না থাকে । (৩) মৃতের একজন আপন বোন থাকলে বৈমাতৃক বোনগণ সম্পত্তির ছ'ভাগের এক ভাগ অংশ পাবে। (৪) মৃতের দু'জন আপন বোন থাকলে বৈমাতৃক বোনগণ কিছুই পাবে না। 

(৫) বৈমাতৃক বোনের সাথে যদি বৈমাতৃক ভাই থাকে, তাহলে ঐ ভাই তাদেরকে আছাবা করে দেবে, অর্থাৎ আপন বোনগণের অংশ দেয়ার পর অবশিষ্ট অংশ একজন পুরুষ দু'জন মহিলার সমান নীতি অনুসারে পাবে। (৬) মৃতের কন্যা বা তার পুত্রের কন্যা থাকলে বৈমাতৃক বোনগণ আছাবা হিসেবে পাবে, অর্থাৎ কন্যাদের অংশ দেয়ার পর বৈমাতৃক বোনগণ বাকী অংশ পাবে। 

(৭) মৃতের পুত্র বা পৌত্র (যত নিম্নে হউক) জীবিত থাকলে বৈমাতৃক বোনগণ কিছুই পাবে না ।
বৈপিতৃক বোনের অংশ ঃ বৈপিতৃক বোন এবং বৈমাতৃক বোনের একই অবস্থা, এ ব্যাপারে উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

মায়ের অংশ

মায়ের তিন অবস্থা। যেমন-
১। মৃতের সন্তান বা ছেলের সন্তান (যত নিম্নে হউক) অথবা মৃতের দু'জন বা ততোধিক ভাই-বোন থাকলে মা ছ'ভাগের এক ভাগ অংশ পাবে। ২। মৃতের সন্তান বা ছেলের সন্তান ইত্যাদি না থাকলে মা সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ পাবে। অনুরূপ মৃতের স্ত্রী বা স্বামীর সাথে যদি পিতা না থেকে একজন দাদা থাকে তাহলেও মা সমূদয় সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ অংশ পাবে। 

৩। মৃতের স্বামীর বা স্ত্রীর সাথে পিতা-মাতা থাকলে স্বামী বা স্ত্রীর অংশ দেয়ার পর মা অবশিষ্ট অংশের তিন ভাগের এক ভাগ অংশ পাবে। তবে এরূপ অবস্থায় মৃতের স্বামী বা স্ত্রী এবং পিতা-মাতা ছাড়া অন্য কেউ থাকবে না।
দাদী বা নানীর অংশ ঃ দাদী বা নানীর দু’অবস্থা। যেমন—

(১) দাদী বা নানী একজন হউক বা একাধিক হউক মৃতের মাতার অবর্তমানে ছ'ভাগের একভাগ অংশ পাবে। (২) মায়ের বর্তমানে দাদী নানী কোন কিছুই পাবে না। আর পিতার বর্তমানে পিতৃকুলের দাদী কিছুই পাবে না। দাদী নানী উভয় থাকলে ছ'ভাগের এক ভাগকে সমান ভাগে বন্টন করতে হবে।

আছাবার প্রকারভেদ ও তাদের অংশ

আছাবা মোট তিন প্রকার। যেমন—(১) স্বয়ং আছাবা। (২) অন্যের মধ্যস্থতায় আছাবা (৩) অন্যের সাথে যুক্ত হয়ে আছাবা। নিম্নে তাদের বিবরণ পৃথকভাবে উল্লেখ করা হল।
১। স্বয়ং আছাবা ঃ মৃত ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনে যাদের মধ্যে কোন স্ত্রীলোকের মধ্যস্থতা নেই তাদেরকে শরীয়তের পরিভাষায় স্বয়ং আছাবা বলে। স্বয়ং আছাবা আবার চার ভাগে বিভক্ত। (১) মৃতের নিম্নস্তরের বংশধরগণ, যেমন—মৃতের ছেলে, নাতী যত নিম্নে যাবে। 

(২) মৃতের পূর্বপুরুষ, যেমন—পিতা, দাদা, পরদাদা, যত উপরে যাবে। (৩) মৃতের পিতার পুত্র, যেমন—ভাই, ভাইপুত্র যত নিম্নে যাবে। (৪) মৃতের পিতামহ অর্থাৎ দাদার পুত্র, যেমন-চাচা, চাচার পুত্র, প্রপৌত্র ইত্যাদি । 

উল্লেখ্য, যবীউল ফুরুযের অংশ বন্টনের পর আছাবার মধ্যে সর্বপ্রথম মৃতের বংশধর অর্থাৎ পুত্রগণের মধ্যে বন্টন করা হবে। পুত্রগণের অবর্তমানে পৌত্রগণের মধ্যে বন্টন করা হবে। 

এ ভাগ একের অবর্তমানে অন্যজন পাবে। আর যদি মৃতের কোন বংশধর না থাকে, তাহলে পূর্বপুরুষগণ পর্যায়ক্রমে একের অর্বতমানে অন্যজন পাবে, অর্থাৎ প্রথমে পিতামহ তার অবর্তমানে প্রপিতামহ । এভাবে উপরের দিকে যাবে।

মৃতের পূর্ব পুরুষগণ না থাকলে মৃতের ভাইগণ একের অবর্তমানে অন্যজন পর্যায়ক্রমে পাবে। যদি ভাইগণ না থাকে, তবে মৃতের চাচাগণ পর্যায়ক্রমে একের অবর্তমানে অন্যজন পাবে অন্যের মধ্যস্থতায় আছাবা : যারা অন্যের দ্বারা এবং অন্যের মধ্যস্থতায় আছাবা হয়ে থাকে তারা চার ধরনের মহিলা। 

(১) মৃতের কন্যা। (2) মৃতের পৌত্রী, (৩) মৃতের আপন বোন (৪) মৃতের বৈমাতৃক বোন এছাড়া এ চার প্রকার মহিলার সাথে তাদের কোন ভাই না থাকলে একা এদের নির্ধারিত অংশ পাবে। আর যদি ভাই থাকে, তাহলে নির্ধারিত অংশ না পেয়ে আছাবা হয়ে যাবে এবং ভাই যা পাবে এরা তার অর্ধেক পাবে।

অন্যের সাথে যুক্ত হয়ে আছাবা-ঐরূপ মহিলাগণকে বলা হয় যারা অন্য একজন মহিলার সাথে বর্তমান থাকার কারণে আছাবা হয়। যথা : মৃতের বোন মৃতের কন্যার সাথে আছাবা হয় কেননা মৃতের কোন কন্যা বা পৌত্রী না থাকলে এ বোন অর্ধেক অংশ পেত। কিন্তু এখন মৃতের কন্যা বা পৌত্রীর অংশ ভাগ করে দেয়ার পর যা বাকী থাকবে বোন তা পাবে ।

যবীউল আরহামের বিবরণ

যবীউল ফুরুজ ও আছাবাগণের অবর্তমানেই যবীউল আরহামগণ মৃতের পরিত্যক্ত সম্পত্তি পেয়ে থাকে । যবীউল আরহাম মোট তিন প্রকার । (১) ঐ সমস্ত লোক যাদের সাথে মৃত ব্যক্তির সম্পর্ক রয়েছে। যেমন- মৃতের কন্যার সন্তানাদি এবং মৃতের পুত্রের কন্যার সন্তানাদিগণ। (২) ঐ সমস্ত লোক যাদের সাথে স্বয়ং মৃত ব্যক্তি সম্পর্কিত। 

যথা : নানা, নানার মা, দাদীর পিতা ইত্যাদি। (৩) ঐ সমস্ত লোক যাদের সাথে মৃতের পিতা-মাতার সম্পর্ক রয়েছে। যথা : মৃতের বোনের সন্তানাদি, ভাইদের কন্যাগণ ও বৈপিতৃক ভাইয়ের পুত্রগণ ।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন !