দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 52

দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি - Part 52

বাড়িতে বা ঘরে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি গ্রহণ

একে অপরকে অপ্রস্তুত অবস্থায় দেখবে, কেউ কারো গোপন বিষয় আকস্মিকভাবে জেনে যাবে এটা ঠিক নয়। এ কারণে বাড়িতে বা ঘরে প্রবেশের পূর্বে ইসলাম মানুষকে শিক্ষা দিয়েছে শিষ্টাচার।। হযরত আনাস থেকে বর্ণিত হয়েছে৷৷ নবী করীম (স) বলেছেনঃ “ হে প্রিয় পুত্র, তুমি যখন তোমার ঘরের লোকদের সামনে যেতে চাইবে তখন বাইরে থেকে সালাম কর। এ সালাম করা তোমার ও তোমার ঘরের লোকদের পক্ষে বড়ই বরকতের কারণ হবে।” 

কারো ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে প্রথমে সালাম দেবে, না প্রথমে ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইবে, এ নিয়ে দু'রকমের মত পাওয়া যায়। কুরআনে প্রথম অনুমতি চাওয়ার নির্দেশ হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন যে, প্রথমে অনুমতি চাইবে, পরে সালাম দেবে। কিন্তু একথা ভিত্তিহীন। কুরআনে প্রথমে অনুমতি চাওয়ার কথা বলা হয়েছে বলেই যে প্রথমে তাই করতে হবে এমন কোন কথা নেই । ইসলামিক কাহিনী।

কুরআনে তো কি কি করতে হবে তা এক সঙ্গে বলে দেয়া হয়েছে । এখানে পূর্বাপরের বিশেষ কোন তাৎপর্য নেই। বিশেষত বিশুদ্ধ হাদীসে প্রথমে সালাম করার উপরই গুরত্ব দেয়া হয়েছে। কালদা ইবনে হাম্বল (রা) বলেনঃ “আমি রাসূলের ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলাম, কিন্তু সালাম করিনি বলে অনুমতিও পাইনি। তখন নবী করীম (স) বললেনঃ “ফিরে যাও, তারপর এসে প্রথমে বল আস্সালামু আলাইকুম, তার পরে প্রবেশের অনুমতি চাও।” (আবু দাউদ, তিরমিজী) 

হযরত জাবের হতে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছেঃ “যে লোক প্রথমে সালাম করেনি, তাকে ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দিও না।” হযরত জাবেদ বর্ণিত অপর এক হাদীসে বলা হয়েছেঃ “ কথা বলার পূর্বে সালাম দাও।” হযরত আবূ মূসা আশ'আরী ও হুযায়ফা (রা) বলেছেনঃ মুহাররম মেয়েলোকদের কাছে যেতে হলেও প্রথমে অনুমতি চাইতে হবে।” এক ব্যক্তি রাসূলে করীম (স) কে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ আমার মায়ের ঘরে যেতে হলেও কি আমি অনুমতি চাইব?”

রাসূলে করীম (স) বললেনঃ “ অবশ্যই।” সে লোকটি বললঃ “ আমি তো তার সঙ্গে একই ঘরে থাকি-তবুও?” রাসূল (স) বললেনঃ “হ্যাঁ, অবশ্যই অনুমতি চাইবে।” সেই ব্যক্তি বললঃ “ আমি তো তার খাদেম।” তখন রাসূলে করীম (স) বললেনঃ “অবশ্যই পূর্বাহ্নে অনুমতি চাইবে, তুমি কি তোমার মাকে ন্যাংটা অবস্থায় দেখতে চাও তা-ই পছন্দ কর?”

তার মানে অনুমতি না নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলে মাকে ন্যাংটা অবস্থায় দেখতে পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমে সালাম করতে হবে এবং পরে প্রবেশের অনুমতি চাইতে হবে। অনুমতি না পেলে ফিরে যেতে হবে। এ ফিরে যাওয়া অধিক ভাল, সম্মানজনক প্রবেশের জন্যে কাতর অনুনয়-বিনয় করার হীনতা থেকে। 

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) হাদীসের ইলম লাভের জন্যে কোন কোন আনসারীর ঘরের দ্বারদেশে গিয়ে বসে থাকতেন, ঘরের মালিক বের হয়ে না আসা পর্যন্ত তিনি প্রবেশের অনুমতি চাইতেন না। এ ছিল উস্তাদের প্রতি ছাত্রের বিশেষ আদব, শালীনতা ।ইসলামিক কাহিনী।

ঘরের প্রবেশ পথের সামনা-সামনী দাঁড়ানো অনুচিত

মানুষ সামাজিক জীব। একে অপরকে তার প্রয়োজন হয়। নানা প্রয়োজনে একজন অপরজনের নিকট গমন করে। একটা পরিবারেও একের কক্ষে অপরের যাওয়ার প্রয়োজন হয় । ইসলাম যেহেতু একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা সেহেতু এসব সাধারণ ব্যাপারেও ইসলাম মানুষকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিয়েছে। কারো বাড়ির সামনে গিয়ে প্রবেশ॥অনুমতির জন্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হলে দরজার ঠিক সোজাসুজি দাঁড়ানো সমীচীন নয়। দরজার ফাঁক দিয়ে ভিতরে নজর করতেও চেষ্টা করবে না। 

নবী করীম (স) যখন কারো বাড়ি বা ঘরের দরজায় এসে দাঁড়াতেন, তখন অবশ্যই দরজার দিকে মুখ করে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন না । বরং দরজার ডান কিংবা বাম পাশে সরে দাঁড়াতেন এবং সালাম করতেন।” এক ব্যক্তি রাসূলে করীমের বিশেষ কক্ষপথে মাথা উচু করে তাকালে রাসূলে করীম (স) তখন ভিতরে ছিলেন এবং তাঁর হাতে লৌহ নির্মিত চাকুর মত একটি জিনিস ছিল। তখন তিনি বললেনঃ “এ ব্যক্তি বাইরে থেকে উঁকি মেরে আমাকে দেখবে তা আগে জানতে পারলে আমি আমার হাতের এ জিনিসটি দ্বারা তার চোখ ফুটিয়ে দিতাম । 

এ কথা তো বোঝা উচিত যে, এ চোখের দৃষ্টি বাঁচানোর আর তা থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে। পূর্বাহ্নে অনুমতি চাওয়ার রীতি করে দেয়া হয়েছে। এ সম্পর্কে হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে স্পষ্ট, আরো কঠোর হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নবী করীম (স) বলেছেনঃ “কেউ যদি তোমার অনুমতি ছাড়াই তোমার ঘরের মধ্যে উঁকি মেরে তাকায়,আর তুমি যদি পাথর মেরে তার চোখ ফুটিয়ে দাও, তাহলে তাতে তোমার কোন দোষ হবে না।” islamic history.

অনুমতি না পাওয়া গেলে কিংবা ঘরে কোন পুরুষ লোক উপস্থিত নেই বলে যদি ঘর থেকে চলে যেতে বলা হয়, তাহলে অনুমতি প্রার্থনাকারীকে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। তার সেখানে আরো দাঁড়ানো এবং কাতর কণ্ঠে অনুমতি চাইতে থাকা সম্পূর্ণ গর্হিত কাজ । তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি অনুমতি পাওয়া না যায়, তাহলেই এরূপ করতে হবে। হযরত আবূ সায়ীদ খুদরী একবার হযরত উমর ফারুকের দাওয়াত পেয়ে তাঁর ঘরের দরজায় এসে উপস্থিত হলেন এবং তিনবার সালাম করার পরও কোন জবাব না, পাওয়ার কারণে তিনি ফিরে চলে গেলেন। 

পরে সাক্ষাত হলে হযরত উমর ফারূক বললেনঃ “তোমাকে দাওয়াত দেয়া সত্ত্বেও তুমি আমার ঘরে আসলে না কেন? তিনি বললেনঃ “আমি তো এসেছিলাম, আপনার দরজায় দাঁড়িয়ে তিনবার সালামও করেছিলাম। কিন্তু কারো কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে আমি ফিরে চলে এসেছি।”
কেননা নবী করীম (স) আমাকে বলেছেনঃ “ তোমাদের কেউ কারো ঘরে যাওয়ার জন্যে তিনবার অনুমতি চেয়েও না পেলে সে যেন ফিরে যায়।” ইমাম হাসান বসরী বলেছেনঃ “ তিনবার সালাম করার মধ্যে প্রথমবার হল তার আগমন সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া। 

দ্বিতীয়বার সালাম প্রবেশ অনুমতি লাভের জন্যে এবং তৃতীয়বার হচ্ছে ফিরে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা।” কেননা তৃতীয়বার সালাম দেয়ার পরও ঘরের ভেতর থেকে কারো জবাব না আসা সত্যই প্রমাণ করে যে,ঘরে কেউ নেই, অন্তত ঘরে এমন কোন পুরুষ নেই, যে তার সালামের জবাব দিতে পারে। আর যদি কেউ ধৈর্য ধরে তবুও ঘরের দুয়ারে দাঁড়িয়েই অবিশ্রান্তভাবে ডাকাডাকি ও চিল্লাচিল্লি করতে থাকতে পারবে না। 

একথাই বলা হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতাংশেঃ “তারা যদি ধৈর্য ধারণ করে অপেক্ষায় থাকত যতক্ষণ না তুমি ঘর থেকে বের হচ্ছ, তাহলে তাদের জন্যে খুবই কল্যাণকর হত।” আয়াতটি যদিও বিশেষভাবে রাসূলে করীম (স)-এর প্রসঙ্গে; কিন্তু এর আবেদন ও প্রয়োগ সাধারণ। কোন কোন কিতাবে এরূপ উল্লেখ পাওয়া যায় যে, হযরত আব্বাস (রা) যিনি ইসলামের বিষয়ে মস্তবড় মনীষী ও বিশেষজ্ঞ ছিলেন। 

হযরত উবাই ইবনে কায়াবের বাড়িতে কুরআন শেখার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করতেন।তিনি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতেন, কাউকে ডাক দিতেন না, দরজায় ধাক্কা দিয়েও ঘরের লোকদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলতেন না। যতক্ষণ না হযরত উবাই নিজ ইচ্ছেমত ঘর থেকে বের হতেন, ততক্ষণ এমনিই দাঁড়িয়ে থাকতেন ।  islamic story.

স্বামী অনুপস্থিত থাকলে স্ত্রীর কর্তব্য 

সামাজিক পারিবারিক ও ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে অনেক পুরুষকে অনেকের বাড়িতেই যেতে হয়। 
এখন বাড়িতে যদি কোন পুরুষ উপস্থিত না থাকে, এমন বাড়িতে তার সাধারণ কোন জিনিসের প্রয়োজন অথবা কোন প্রয়োজনীয় কথা জানানো প্রয়োজন তখন কি করণীয়? এ অবস্থায় ইসলামের নির্দেশ হচ্ছে “ আর তোমরা যখন তাদের কাছ থেকে কোন জিনিস পেতে চাইবে, তাহলে তা পর্দার আড়ালে বাইরে দাঁড়িয়েই তাঁদের নিকট চাইবে। বস্তুত এ নীতি তোমাদের ও তাদের দিলেও পবিত্রতা রক্ষার পক্ষে অধিকতর উপযোগী, অনুকূল।”

আয়াতটি যদিও স্পষ্ট রাসূলে করীমের বেগমদের সম্পর্কে অবতীর্ণ এবং এ নির্দেশও বিশেষভাবে রাসূলের বেগমদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য । কিন্তু এ আয়াতেরও একটি সাধারণ আবেদন রয়েছে এবং এ নির্দেশও সাধারণ মুসলিম সমাজের মহিলাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রযোজ্য হবে ।
কেননা, তাদের কাছ থেকে কিছু পেতে হলেও তো সে পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়েই চাইতে হবে এবং বিনানুমতিতে তাদের ঘরেও প্রবেশ করা যাবে না। উপরে উদ্ধৃত নির্দেশষমূহ পুরুষদের লক্ষ্য করেই বর্ণিত হয়েছে; কিন্তু তাই বলে মেয়েরা তার বাইরে নয়, তাদের পক্ষে এর কোনটিই লংঘনীয় নয় ।

মেয়েদের লক্ষ্য করে আরো অতিরিক্ত নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ যেন মেয়েরা তা পালন করে নিজেদেরকে পর পুরুষের দৃষ্টি ও আকর্ষণের পংকিলতা থেকে পূর্ণমাত্রায় রক্ষা করতে পারে। মেয়েদের পক্ষে যদি বাইরের পুরুষদের সাথে কথা

বলা একান্তই জরুরী হয়ে পড়ে এবং তা না বলে কোন উপায়ই না থাকে, তাহলে * কথা বলতে হবে বৈকি; কিন্তু সেজন্যেও কিছুটা স্পষ্ট নিয়মনীতি রয়েছে, যা লংঘন করা কোন ঈমানদার মহিলার পক্ষেই জায়েয নয়। কুরআন মজীদের বলা হয়েছেঃ “ তোমরা যদি সত্যিই আল্লাহ্ ভীরু থাক, তাহলে কস্মিনকালেও নিম্নস্বরে কথা বলবে না কেননা সেরূপ কথা বললে রোগগ্রস্ত মনের লোক-লোভী ও লালসা-কাতর হয়ে পড়বে।

আর তোমরা প্রচলিত ভাল কথাই বলবে।“নিম্নস্বরে কথা বলবে না' মানেঃ “ তোমাদের কথাকে বিনয় নম্রতাপূর্ণ ও নারীসূলভ কোমল ও নরম করে বলবে না, যেমন করে সংশয়পূর্ণ মানসিকতা সম্পন্ন ও চরিত্রহীনা মেয়েলোকেরা বলে থাকে।” কেননা এ ধরনের কথা শুনলে লালসাকাতর ব্যক্তিরা খুবই আশাবাদী হয়ে পড়ে। তাদের মনে মনে এ লোভ জাগে যে, হয়ত এর সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে।ইসলামিক কাহিনী।

কেবল মেয়েদেরই নয়, পুরুষদেরও অনুরূপ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিহায়া কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছেঃ “নবী করীম (স) পুরুষকে তার নিজের স্ত্রী ছাড়া ভিন্ন মেয়েলোকের সাথে খুব নরম সুরে ও লালসা পিচ্ছিলকণ্ঠস্বরে কথা বলতে নিষেধ করেছেন, যে কথা শুনে সেই মেয়েলোকের মনে কোন লালসা জাগতে পারে।” মানসিক রোগাক্রান্ত লোকেরা লালসায় কাতর হতে পারে'। একথা বলার বিশেষ কারণ হচ্ছে এই যে, ভিন্ন মেয়েলোকের কাছ থেকে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন সম্ভাবনা আশা করা কেবল এক ধরনের লোকদের পক্ষেই সম্ভব।

ঈমানদার লোক কখনো এরূপ হয় না। কেননা কামিল ঈমানদার ব্যক্তির দিল ঈমানের প্রভাবে শান্ত-তৃপ্ত-সমাহিত। সে সবসময় আল্লাহ্র স্পষ্ট ঘোষণাবলী দেখতে পায়- মনে রাখে। ফলে সে আল্লাহ্ হারাম করা কোন কিছু পেতে লোভ করে না। কিন্তু যার ঈমান দুর্বল, যার দিলে মোনাফিকী রয়েছে, সে-ই কেবল হারাম জিনিসের প্রতি লোভাতুর হয়ে থাকে। কিন্তু যে মেয়েলোকের সাথে কথা বলা হচ্ছে, সে যদি স্পষ্ট ভাষায় ও অকাট্য শব্দে ও স্বরে কাটাকাটাভাবে জরুরী কথা কয়টি বলে দেয়, তাহলে এ মানসিক রোগাক্রান্ত লোকেরা লোভাতুর হবে না, তারা নিরাশ হয়েই চলে যেতে বাধ্য হবে।

আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃ “লোকদের সাথে কথা বলার সময় কণ্ঠস্বর মিহি করে বোলো না। যেমন সন্দেহপূর্ণ চরিত্রের মেয়েরা করে থাকে। কেননা এ ধরনের কথা বলাই অনেক সময় বিরাট নৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে থাকে।” শয়তান প্রকৃতির ও চরিত্রহীন লোকেরা নারী শিকারে বের হয়ে সাধারণত সেসব জায়গায়ই ঢু' মারে, যেখান থেকে কিছুটা সুযোগ লাভের সম্ভাবনা মনে হয় । আর এ উদ্দেশ্যে স্বামী কিংবা বাড়ির পুরুষদের অনুপস্থিতি তারা মহা সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। 

নারী শিকারীর এ ধরনের মৃগয়া কেবল সেখানেই সার্থক হয়ে থাকে, যেখানে নারী নিজে দুর্বলমনা, প্রতিরোধহীন, যে শিকার হবার জন্যে পর পুরুষের হাতে ধরা দেবার জন্যে কায়মনে প্রস্তুত হয়েই থাকে। নারীদেরকে সাবধান ও সতর্ক করে তোলবার জন্যেই আল্লাহর এ নির্দেশবাণী অবতীর্ণ হয়েছে। অপরদিকে সাধারণভাবে সব পুরুষকেই রাসূলে করীম (স) স্বামী বা বাড়ির পুরুষের অনুপস্থিতিতে ঘরের মেয়েদের কথা বলতেই নিষেধ করেছেন।

হযরত আমর ইবনুল আস (রা) বর্ণনা করেছেন, নবী করীম (স) মেয়েলোকদের সাথে তাদের স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে কথা বলতে নিষেধ করেছেন।” মেয়েরা যদি ভিন্ন পুরুষের সাথে কথা বলতে বাধ্যই হয়, না বলে যদি কোন উপায়ই না থাকে, তাহলে কুরআনের নির্দেশ হচ্ছেঃ “খুব ভাল ও প্রচলিত ধরনের কথা বলবে।” এ আয়াতাংশের তাফসীরে আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃ “তারা বলবে সাধারণভাবে লোকদের কাছে পরিচিত ও প্রচলিত কথা, যার মধ্যে সন্দেহ-সংশয়ের লেশমাত্র থাকবে না এবং পাপী ও চরিত্রহীন লোকেরা অবৈধ সম্পর্কের লোভে লালায়িতও হবে না।” 

সে সঙ্গে একথাও মনে রাখা আবশ্যক যে, মেয়েদের শরীরের ন্যায় তাদের কণ্ঠস্বরও পর্দায় রাখতে হবে। দেহকে যেমন ভিন্ন পুরুষের সামনে অনাবৃত করা যায় না, কণ্ঠস্বরকেও তেমনি ভিন্ন পুরুষের কর্ণকুহরে প্রবেশ করানো যায় না। ইমাম ইবনুল হাম্মাম বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই মেয়েলোকের সুরেলা কণ্ঠস্বর ভিন্ন পুরুষ থেকে লুকোবার জিনিস।” ঠিক এজন্যেই নবী করীম (স) বলেছেন, নামাযে ইমামের ভুল হলে সেই জামা'আতে শরীক পুরুষেরা তাকবীর বলবে, আর মেয়েরা হাত মেরে শব্দ করবে।” 

এ থেকেও প্রমাণিত হয় যে, মেয়েদের কণ্ঠস্বর অবশ্যই গোপনীয়, ভিন্‌ পুরুষ থেকে তা অবশ্যই লুকোতে হবে। এরই ভিত্তিতে বলা হয়েছে যে, মেয়েরা নামাযে যদি উচস্বরে কুরআন পাঠ করে তবে তাতে নামায নষ্ট হয়ে যাবে। শুধু কণ্ঠস্বরই নয়, মেয়েদের অলংকারাদির ঝংকারও ভিন্ন পুরুষদের কর্ণকুহর থেকে গোপন করতে হবে। কুরআন মজীদে বলা হয়েছেঃ “এবং তারা যেন নিজেদের পা মাটির উপর শক্ত করে না ফেলে, কেননা তাতে করে তাদের গোপনীয় অলংকারাদির ঝংকার শুনিয়ে দেয়া হবে।” 

আর জাহিলিয়াতের যুগে মেয়েরা পারে পাথরকুচি ভরে মল পরত, আর তারা যখন চলাফেরা করত, তখন শক্ত করে মাটিতে পা ফেলত। এতে পা ঝংকার দিয়ে উঠত। এ আয়াতে তা করতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা অলংকারের ঝংকার শুনতে পেলেও ভিন্ন পুরুষের মনে অতি সহজেই যৌন আকর্ষণ জেগে উঠে। তাই নিখুঁত পর্দা রক্ষার জন্যে অলংকারের বংকারও পরপুরুষ থেকে লুকোতে হবে।

আল্লামা যামাখশারী এ আয়াতের ভিত্তিতে লিখেছেন, মেয়েলোকদের যখন অলংকারের শব্দ জাহির করতে নিষেধ করা হয়েছে, তখন জানা গেল যে, অলংকার ব্যবহারের অঙ্গসমূহ গোপন করা আরো বেশি করে নিষিদ্ধ হবে।

Disclaimer:
যেহেতু এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছে দোযখের কঠোর আযাব ও বেহেশতের মহা শান্তি নিয়ে তাই আমরা চাই যাতে সবাই সঠিক শিক্ষা পায় এজন্য আমরা অনেক সতর্কতার সাথে এই ওয়েবসাইট এর সম্পূর্ণ পোস্ট লিখেছি যাতে ভুল কোন কিছু না হয় তারপরও যদি আপনার চোখে পড়ে কোন ধরনের ভুল হয়েছে তাহলে আমাদেরকে জানিয়ে দেবেন আমাদের ইমেইল এর মাধ্যমে এবং আমাদেরকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

আমাদের ই-মেইল anwaraliapps@gmail.com বাংলায় লিখতে গিয়ে হয়তো কোন ভুল ত্রুটি হতে পারে তাই আমাদের অনুরোধ রইলো যদি আপনার চোখে এরকম কোন ভুল ধরা পড়ে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইমেইল করে জানিয়ে দিবেন এবং আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন

যদি এই পোস্ট আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্য আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন !